প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ছোট বোনকে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থেকে অপহৃত ১৪ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সায়ের আলম পাভেল, মো. শেখ আলমগীর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম।
পুলিশ জানায়, মো. সায়ের আলম পাভেল একজন রংমিস্ত্রী। তবে পরিচয় দিতেন বিবিএ, এমবিএ ডিগ্রিধারী, আবার কখনো ম্যাজিস্ট্রেটের ছেলে। এসব পরিচয়ে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় এক তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন পাভেল। তরুণীর বাবা-মায়ের কাছে অপমানিত হন। এ কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন পাভেল। একপর্যায়ে পাভেল বলতে শুরু করেন তার ছোট ভাই লন্ডনে ব্যবসা করেন এবং তার সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান ওই তরুণীর ছোট বোনকে (১৪)।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
আজিমুল হক বলেন, অপহরণের পর মুক্তিপণ চাইলে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ওই কিশোরীকে অপহরণ করে টাঙ্গাইলে জাহাঙ্গীরের বাসায় রাখা হয়। তিনি আরও দুই মামলার আসামি। এ থেকে পুলিশ ধারণা করছে গ্রেপ্তাররা নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য। তবে পরবর্তী তদন্তে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তিনি বলেন, অপহরণের পর জাহাঙ্গীর ভুক্তভোগীর বাবার কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তা নাহলে মেয়েটিকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করার হুমকি দেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে মেয়েকে গুম করারও হুমকি দেওয়া হয়।
ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, আলমগীর তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে রং মিস্ত্রির কাজ করেন। রং মিস্ত্রির কাজের সুবাদে আলমগীরের সঙ্গে পাভেলের পরিচয় হয়। আলমগীরের মাধ্যমে পরিচয় সূত্রে ওই এলাকার এক তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন পাভেল। তরুণীর বাবা-মায়ের কাছেও বিয়ের প্রস্তাবও নিয়ে যান তিনি। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ওই তরুণীর বিয়ে হয়ে গেলে পাভেল তার ছোট বোনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পাভেল এমনভাবে তাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, তার ভাইকে বিয়ে করার আশায় ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ওই ভাইকে দেখেছে কি না। সে বলেছে কখনো দেখেনি, শুধু ছবি দেখেছে। পাভেলের এই ভাইয়ের কথা বলা প্রতারণারই অংশ হতে পারে।
কেএম/এসএন
