ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দারুস সালাম থানা এলাকায় স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার (২০ জুলাই) ঢাকার সদরঘাট ও মেরাদিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের নাম-মো. সোহেল আহম্মেদ পল্লব, মো. পলাশ শেখ, মো. মাসুদ রানা, ও রবিন হালদার পরেশ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত হতে লুন্ঠনকৃত স্বর্ণালঙ্কারসহ বিক্রয়লব্ধ পাঁচ লক্ষ টাকা ও আনুমানিক বিশ ভরি স্বর্ণের গহনা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশ বলছে, তারা পুলিশ পরিচয় প্রথমে ভিকটিমের পথ প্রতিরোধ করে এরপরে তার কাছ থেকে স্বর্ণ টাকা পয়সা ডাকাতি করে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ভিকটিম টিটু প্রধানীয়া ঢাকার কোতয়ালীর তাঁতী বাজারে ধানসিড়ি চেইন এবং বল হাউজ নামক স্বর্ণের দোকানের একজন কর্মচারী। সে স্বর্ণের দোকানে তৈরি বিভিন্ন গহনা দেশের বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে ডেলিভারি দিয়ে থাকে। গত ১৭ জুলাই ভিকটিম তাঁতী বাজারের ধানসিড়ি চেইন এন্ড বল হাউজ নামক স্বর্ণের দোকান হতে তৈরিকৃত বিভিন্ন গহনা নিয়ে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর ও সখিপুর থানা এলাকার বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোটর সাইকেল যোগে রওনা হন। মোটর সাইকেলে করে গাবতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছে তিনি টাঙ্গাইলের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি ভিকটিমের কাছে এসে নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিকটিমের নাম ঠিকানা ও পেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। তখন ভিকটিম নাম-ঠিকানা বলার পরে আসামি ভিকটিমের ব্যাগের মধ্যে কী আছে জানতে চায়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়ার কারণে ভিকটিম আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলে, ব্যাগের মধ্যে ডিএমপি ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন তাঁতী বাজারের ধানসিড়ি চেইন অ্যান্ড বল হাউজ নামক স্বর্ণের দোকানের সর্বমোট ৩৮ ভরি ১৪ আনা স্বর্ণের তৈরি বল চেইন, চেইন ঝুমকা, বল ঝুমকা, লকেট, আংটি, ব্রেসলেট আছে বলে জানান।
তিনি বলেন, বিশেষ কায়দায় মোড়ানো ২টি প্যাকেটে করে প্যাকেটগুলো খাকি রংয়ের একটি স্কুল ব্যাগের মধ্যে ভরে তিনি নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আরও অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জন লোক এসে যোগ দেয় এবং তারা ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে জোরপূর্বক ভিকটিমের কাছে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ, যাহার মধ্যে সর্বমোট ৩৮ ভরি ১৪ আনা, স্বর্ণের গহনা, স্বর্ণের ভাউচার, দোকানের ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট ও তার ব্যবহৃত টেকনো টাচ মোবাইল ফোন, যাহার ব্যবহৃত সিম নং-০১৬১৫২১২৬৫৩, মূল্য আনুমানিক ৮,৮০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ভিকটিমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেলের (ঢাকা মেট্রো-ল-৫৬-৬৪৩৮) মাঝখানে বসিয়ে গাবতলী বেড়ীবাঁধ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমকে কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর একটি সিএনজিতে উঠিয়ে বিজয় সরণি মোড়ে ট্রাফিক সিগনালে সিএনজিটি থামলে ভিকটিমকে সিএনজিতে রেখে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
ডিবি পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। আসামিরা যোগসাজশে ভিকটিমের পথরোধ করে সর্বমোট ৩৮ ভরি ১৪ আনা স্বর্ণের গহনা, স্বর্ণের ভাউচার, দোকানের ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট ও ভিকটিমের ব্যবহৃত টেকনো টাচ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/
