দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ১০

দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, সাভারের আশুলিয়ায় হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতিসহ বিভিন্ন সময়ে নানান জায়গায় ডাকাতি করত তারা।
শনিবার (১১ জুন) রাতে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার (১২ জুন) দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে র্যাব জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। ডাকাত সর্দার হীরার নেতৃত্বে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দল গত এক মাসে চট্টগ্রাম থেকে যশোরের বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস এবং কাশিয়ানীতে ঢাকা থেকে কোটালীপাড়াগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেছে। এই দলের সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন। গ্রেপ্তার ডাকাত সর্দার হীরা ও তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা বিভিন্ন ডাকাতির পরিকল্পনা করে থাকে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সর্দার মো. হীরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখের অন্য সহযোগীরা হচ্ছেন— মো. হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা (৩৯), আরিফ প্রামানিক ওরফে আরিফ হোসেন (৩৩), মো. নুর ইসলাম (৫৩), মো. রাজু শেখ, মো. রেজাউল সরকার (৪৯), মো. রতন (৩৬), মো. শরিফুল ইসলাম (৩৯), মো. হানিফ (৪২), মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৮টি দেশীয় অস্ত্র, ৪টি শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের টিকিট, ৩টি ব্যাগ জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলামুখী যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা ১০-১৫টি বাসে ডাকাতি করেছে। আগেও চক্রটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করেছে বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা রুটের বাস ছাড়াও চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় তারা বাস চালকের হাতে ও হেলপারের পেটে ছুরিকাঘাত করে। এছাড়া চক্রটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনী ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কণক পরিবহন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সুরভী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সিলেট-রাজশাহী মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও রইস পরিবহন, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস ও সরকার ট্রাভেলস, রাজশাহী-বরিশাল মহাসড়কে সেবা গ্রীন লাইন পরিবহন ও তুহিন পরিবহনে ডাকাতি করেছে।
ডাকাতির কৌশল বর্ণনা করে র্যাব জানায়, ডাকাতির জন্য তারা ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করে। এক্ষেত্রে চক্রটির কয়েকজন সদস্য আগেই নির্দিষ্ট বাসের কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে বাসে উঠে। অন্য সদস্যরা পরে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে টার্গেট করা বাসে উঠে। এছাড়া যেসব দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ছাড়া যাত্রী উঠায় তারা এসব বাসকে প্রাধান্য দিয়ে ডাকাতি করত।
মঈন বলেন, সাধারণত তারা মহাসড়কের নির্জন এলাকাকে বাস ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। ডাকাতি করার পর তারা আবার আশুলিয়ায় ফিরে আসে। এছাড়া বিভিন্ন সময় তারা বাড়িঘরে ডাকাতি করত বলে জানা যায়। গ্রেপ্তার প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময়ে সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে কারাভোগ করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এএস
