অনুপকে মেরে নিজের ভেক্যু দিয়ে ১৫ ফুট বালিচাপা দেন রিপন

ঢাকার কেরানীগঞ্জে পাওনা টাকা আনতে গিয়ে ৪ জানুয়ারি নিখোঁজ হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপ বাউল। নিখোঁজের দীর্ঘ ৫ মাস পর মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ অনুপ বাউল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘুরিয়া ইউনিয়নের পাইনা ভৈরব নগর গ্রামের মৃত কানাই বাউলের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী এলাকার বিসিক কেমিক্যাল পল্লির ১৫ ফুট বালুর নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে পিবিআই সদর দপ্তর ধানমন্ডিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, যে ভেক্যু দিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপের লাশ পুঁতে রাখা হয় সেই ভেক্যু দিয়েই ১৫ ফুট মাটির নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পিপিবআই জানায়, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদী খাঁন এলাকায় নিখোঁজ হওয়া ভিকটিম অনুপ বাউল (৩৪) হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন করে ও এ ঘটনায় জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা।
ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, এ ঘটনার মূল আসামি হলো ভেক্যুর মালিক রিপন মন্ডল (৩২)। অনুপকে হত্যা করে নিজস্ব ভেক্যু দিয়েই ভিকটিমের লাশ বালির নিচে পুঁতে রাখে রিপন। তার দেখানো মতো ভেক্যু দিয়ে খনন করে ভিকটিমের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রিপন মন্ডল (৩২), পিযুষ করাতি (২৫), ও নয়ন মন্ডল (২৬) কে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার জয়েনপুর গ্রামের নিজ নিজ বাড়ি থেকে বুধবার (১ জুন) রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। একই তারিখ রাতে দিলীপ চন্দ্র রায় (৩৪) কেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নিহত অনুপ বাউলের ছোট ভাই বিপ্লব বাউল বলেন, অনুপ বাউল গত ৩ জানুয়ারি স্ত্রী-সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার ভাড়ালিয়া গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে তার ব্যবসায়িক অংশীদার নয়ন অনুপকে দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে মোবাইলে ডেকে নেন। গত ৪ জানুয়ারি সকাল ৯টায় নয়নের কাছে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন ভাই। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে নয়ন তার মোবাইল থেকে কল করে আমাকে জানান অনুপ ফোন রিসিভ করছে না। পরে আমি ভাইকে ফোন দিলে সেও ফোন রিসিভ করেননি। পরে বিকেল ৫টার পর থেকে ভাইয়ের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।’
বিপ্লব আরও বলেন, এই ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ প্রথমে তা গ্রহণ করেনি। পরে সিরাজদিখান থানায় একটি জিডি করি। এই ঘটনায় রাজধানীর ধলপুর র্যাব-১০ এর কার্যালয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়।
জানা যায়, নিখোঁজ অনুপ বাউলের রাজধানীর তাঁতী বাজারে একটি সোনার দোকান রয়েছে। এই দোকানের ব্যবসায়িক অংশীদার হচ্ছেন নয়ন। নয়নের বাড়ি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামে। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অপুন বাউলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পি বি আই পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম।
কেএম/এএস
