চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করছে প্রতারক চক্র

রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিভিন্ন শ্রেণির অপরাধ চক্র। এর মধ্যে এসব চক্রের সদস্যরা চাকরি প্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, চায়ের দোকান, হাসপাতাল কিংবা বাস টার্মিনাল ঘুরে ঘুরে চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করছে সংঘবদ্ধ প্রতারকরা। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তৈরি করছে সম্পর্ক। আবেদন করে দেওয়ার পাশাপাশি পরীক্ষার আগেই দিচ্ছে প্রশ্ন সবরাহের নিশ্চয়তা। প্রলোভনে পা দিলেই ধাপে ধাপে ভুয়া আবেদনপত্র ও প্রশ্ন দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।
বুধবার (১৮ মে) ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ এমন প্রতারকদের গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানান।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরির সার্কুলার হলেই জনসমাগমস্থলে ঘুরে ঘুরে আগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা। চাকরির আবেদন থেকে শুরু করে নিয়োগ পর্যন্ত সব দায়িত্ব তাদের। টোপ দেয়, পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন এনে দেওয়ারও। বিনিময়ে জনপ্রতি দিতে হবে তিন লাখ টাকা।
পুলিশ বলছে, এসব প্রলোভনে পা দেওয়া চাকরিপ্রত্যাশীদের কিছুদিন পর ভুয়া আবেদনপত্র পূরণ করে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয় প্রতারকরা। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য আবেদনপত্রে যোগ করে কিউ আর কোড। এরপর খরচ হিসেবে টাকা নিয়ে বন্ধ করে দেয় যোগাযোগ। এ পর্যায়ে কেউ টাকা না দিলে, তাকে পরীক্ষার আগে ভুয়া প্রশ্ন পাঠিয়ে হাতিয়ে নেয় টাকা।
ভুক্তভোগী এছহাক আলী বলেন, আমার সঙ্গে প্রতারক চক্রের দেখা হয় এক হাসপাতালের সামনে। আমাকে বলেন যে আমার পরিচিত কেউ আছে কি না চাকরি খুঁজছে, তার হাতে নাকি কয়েকটা চাকরি আছে। তিনি আমার কাছ থেকে আমার ছেলের বায়োডাটা চান। বলেন, কিছু খরচ পাতি আছে চাকরি হয়ে যাবে। পরে তিনি আমার কাছ থেকে কিছু টাকা নেন কিন্তু আমি তাকে ফোন দিলে আর ধরে না।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দুই প্রতারককে গ্রেপ্তারের পর কর্মকর্তরা বলছেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সপ্তাহে অন্তত ৬০ জনের কাছ থেকে টাকা হাতানোর টার্গেটে কাজ করত তারা। তদন্তের স্বার্থে ওই দুই প্রতারকের নাম জানায়নি পুলিশ।
এ বিষয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম) উপকমিশনার তারেক বিন রশিদ বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে তারা মেসেজ পাঠাতো। তারা চাকরি পাইয়ে দিতে পারবে এমনকি প্রশ্নপত্রও সরবরাহ করতে পারবে। তারা চাকরি প্রার্থীর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে একটি কিউআর কোড জেনারেট করে ভুয়া নিয়োগপত্রে ইনসার্ট করে প্রার্থীকে সরবরাহ করে। যখন তারা সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে যায় তখন তারা দেখতে পায় নিয়োগপত্রটি ভুয়া।
তিনি বলেন, এসব অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের ও চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।
কেএম/এসএন
