নাহিদকে রড দিয়ে পেটানো মাহমুদুল গ্রেপ্তার: র্যাব

রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়াকে রড দিয়ে পেটানো ঢাকা কলেজের ছাত্র মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাহিদ হত্যায় জড়িত সিয়ামকে শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, এ ঘটনার দিন নাহিদকে রড দিয়ে পেটান সিয়াম। আর তাকে কুপিয়েছেন ঢাকা কলেজের আরেক ছাত্র ইমন বাশার। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের শুরুতে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের নিউমার্কেটে ডেকে নিয়ে যাওয়া দোকান কর্মচারী মেহেদী হাসান বাপ্পিসহ দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজের ৫ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গত ১৮ এপ্রিল রাতে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ১৯ এপ্রিলও চলতে থাকে। সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন দুপুরে আহত হন ডেলিভারিম্যান নাহিদ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়ার পর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ফাস্টফুডের দোকানে ইফতারের টেবিল সাজানো নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। যে দুজন কর্মচারীর ডাকে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা নিউ মার্কেটে গিয়েছিলেন, সেই দুজনকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হলেন মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব ও মেহেদী হাসান বাপ্পী। তাদের কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ও ছবি দেখে নাহিদ হত্যায় দুজনকে শনাক্ত করেছে র্যাব। তাদের একজন সিয়াম।
তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকালে জানায় র্যাব। দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ইটের আঘাতে নাহিদ পড়ে যান। এরপর তাকে রড দিয়ে বেধড়ক আঘাত করেন সিয়াম। ফুটেজে আরেকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়। তার নাম ইমন বাশার।’
কোন পাশ থেকে বা কার ইটের আঘাতে নাহিদ পড়ে যান, তা চিহ্নিত করতে পারেনি র্যাব। এদিকে, বাহিনীটি জানায়, ইমন পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
খন্দকার আল মঈন জানান, সিয়াম হলে থাকতেন না। তিনি ঢাকা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাইরে থেকে এসে কলেজ ছাত্রদের পক্ষে সংঘর্ষে জড়ান তিনি।
পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে নাহিদের মাথায় চারটি আঘাতের চিহ্নের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া দেহের বিভিন্ন অংশে জখমের উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
নাহিদের পরিবার নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা করার পর এর তদন্ত শুরু করে ডিবির রমনা বিভাগ। এতে নিশ্চিত হয়, সেদিন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ মাঠে নেমেছিল। তাদের অনেকের কাছেই ছিল ধারালো দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও রড। পরিচয় আড়াল করতে অধিকাংশের মাথায় ছিল হেলমেট।
কেএম/টিটি
