পাঁচ মাসে এটিএম বুথ থেকে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার-২

রাজধানীর মোহাম্মদ পুর ও মিরপুর এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে পাঁচ মাসে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। টাকা লোডের দায়িত্বে থাকা গার্ডা শিল্ড নামে একটি সিকিউরিটি কোম্পানির ১১ কর্মীর মাধ্যমে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (২৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার মো জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, আদলতের নির্দেশে বুথ থেকে টাকা চুরির মামলাটি তদন্ত শুরু করলে এ ঘটনায় গার্ডা শিল্ডের আরও দুই কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তাহমিদ উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুর রহমান নামে ওই দুজনকে গ্রেপ্তারের পর গত ২২ এপ্রিল তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরীর সেনপাড়া পর্বতার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৮৫২ নম্বর এটিএম বুথসহ মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২৩১টি বুথ থেকে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের দায়িত্বে থাকা তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমানসহ ১১ কর্মী ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়।
পিবিআই জানায়, আসামিরা মোট ১১ জন পর্যায়ক্রমে দুজন করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের ডিউটি করতেন। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফল্স ট্রানজেকশন করতেন। এভাবে অক্টোবর ২০২১ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে উক্ত চক্রটি সর্বমোট ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের গোচরে আসলে কর্তৃপক্ষ গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। গার্ডা শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে গ্রেপ্তার দুই আসামির বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা বুথের টাকা চুরিতে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেন। একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, মিষ্টার আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম এবং শিশির কুমার একই উদ্দেশ্যে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যুকরা এটিএম কার্ড দিয়ে ফল্স ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতেন। এভাবে অক্টোবর ২০২১ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ের চক্রটি সর্বমোট ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
কেএম/এসএন
