রাজধানীর ঢাকার উত্তরায় দম্পতির ওপর হামলার ঘটনায় নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। ঘটনার শিকার মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচিত করা হলেও, তাদের বৈধ সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন শম্পা নামের এক নারী, যিনি নিজেকে মেহেবুল হাসানের প্রকৃত স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: উত্তরায় তরুণ-তরুণীকে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল, আটক ২ (ভিডিও)
শম্পা গণমাধ্যমকে বলেন, "মেহেবুল হাসান আমার বৈধ স্বামী। নাসরিন আক্তার ইপ্তির সঙ্গে তার স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।" তিনি দাবি করেন, এ সংক্রান্ত প্রমাণাদিও তার কাছে রয়েছে।
আজ বুধবার এক লাইভ সম্প্রচারে শম্পা দাবি করেন, তিনি এবং নাসরিন আক্তার ইপ্তি দুজনেই মেহবুল হাসানের সহকর্মী। ২০১৬ সালে মেহবুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে, যাদের বয়স বর্তমানে ৫ ও ৪ বছর। লাইভ চলাকালীন শম্পা তার দুই কন্যাসন্তানকেও সবার সামনে নিয়ে আসেন।
শম্পা অভিযোগ করেন, তার স্বামীর সঙ্গে সহকর্মী ইপ্তির পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তবে তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তিনি। এ ছাড়া, মিডিয়ার সামনে নিজের পরিচয় প্রকাশ করায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শম্পা।
অন্যদিকে, মেহবুল হাসান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান। শম্পা জানান, সাধারণত স্বামী বাসার বাইরে থাকলে তিনি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সংবাদ দেখে তিনি হামলার বিষয়টি জানতে পারেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শম্পা বলেন, তিনি জানেন না উত্তরায় তার স্বামীর ওপর হামলার কারণ কী ছিল বা সে রাতে তিনি সেখানে কেন গিয়েছিলেন। লাইভ চলাকালীন হঠাৎ মেহবুল হাসান তার মোবাইলে কল দেন এবং রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, ‘তুই মিডিয়াতে থাক, মিডিয়াতে তুই বউ হয়ে আয়।’
এ সময় মেহবুলের মা, অর্থাৎ শম্পার শাশুড়িও ফোনে কথা বলেন। তবে তিনি কী বলেছেন, তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাসরিন আক্তার ইপ্তি কিংবা মেহবুল হাসানের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে শম্পার অভিযোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: উত্তরায় দম্পতির ওপর হামলার ঘটনায় পুরো চক্র গ্রেপ্তার
উল্লেখ্য এর আগে সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে ‘বেপরোয়া’ চালিয়ে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। সেখানে আরেকটি মোটরসাইকেলে থাকা মেহেবুল ও নাসরিন এর প্রতিবাদ জানান।
এরপর রিকশায় ধাক্কা দেওয়া বাইকের আরোহীরা ওই দম্পতিকে হুমকি দেয় ও এক পর্যায়ে কিল-ঘুসি মারতে শুরু করে। পরে তারা ফোন করে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনলে তারা অস্ত্রসহ ওই দম্পতির ওপর চড়াও হয়।
হামলার ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। ঘটনার দিনই দুজনকে আটক করে পুলিশে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছেন। পরে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের পাশাপাশি তাদের দেয়া তথ্যে হামলায় ব্যবহৃত রাম দা, মোটরবাইক উদ্ধার করা হয়েছে। সবশেষ জানা গেছে, জড়িত পুরো চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।