সাভারে সরকারি ঘর পরিত্যক্ত, বসবাস বিলাসবহুল বাড়িতে
দেশে গৃহহীন নিরসনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। ধাপে ধাপে অসংখ্য ঘর উপহার দিয়েছে সরকার। কিন্তু এসব ঘর অনেক দরিদ্র পরিবারকে না দিয়ে অনেকটা নিজেরাই লুফে নিয়েছে জনপ্রতিনিধিরা। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে এমন একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে মহিলা মেম্বারের বোনকে। যার তিন তলা বাড়ি রয়েছে।
সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বরের ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্যের কাছে টিআর, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় ঘরের বরাদ্দ আসলে তিনি তা প্রদান করেন তারই বোন মোছা: আমেনা খাতুনকে। যার রয়েছে তিন তলা বিলাসবহুল বাড়ি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বরের ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য নুরতাজ বেগম সামর্থহীনদের বঞ্চিত করে নিজেই হাতিয়ে নিয়েছেন এই কর্মসূচির ঘর। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সামর্থহীনরা। তিনি তার বোন আমেনাকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের টিআর, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় ঘর ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা ব্যয়ে ঘর প্রদান করেছেন, যা প্রায় তিন বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এই ঘরে কেউ বসবাস করছেন না। উপকারভোগী আমেনা বসবাস করছেন তিন তলা বিলাসবহুল বাড়িতে। যার ৫ তলার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, গরীবদের বঞ্চিত করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে ইউপি সদস্য নূরতাজ।
উপকার ভোগী আমেনার মা বলেন, আমার মেয়ে নুরতাজ। সে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নারী মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিল। এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পাশ করেছে। সে তার বোনকে এই ঘরটি উপহার দিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় সেখানে আমার অপর মেয়ে আমেনা থাকে না দীর্ঘদিন ধরে। বিদ্যুতের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ঘরটি পরিত্যাক্ত আছে। তা ছাড়া ঘরে যাতায়াতের রাস্তাও নাই। এ জন্য আমেনা আমার বাড়িতে বসবাস করছে।
ইউপি সদস্য নুরতাজ বলেন, আমি ঘর আমার বোনকে দিয়েছি। সে ওই ঘরেই বসবাস করত। কিন্তু বিদ্যুৎ আর রাস্তার অভাবে সেখানে যাতায়াত করতে পারে না। তাই ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। তিনি এই প্রতিবেদককে দেখা করার পরামর্শ দিয়ে নিউজ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে বলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নুরতাজের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি বলেন, আমেনা তার বাবার সম্পত্তি পেয়েছেন। সেখানে তারা সম্মিলিতভাবে ৫ তলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। উপকারভোগী আমেনা সেখানেই থাকেন। সরকারি ঘরে প্রায় তিন বছর ধরে কেউ থাকে না। তারা অনেক সম্পদের মালিক। তার পরেও সরকারি ঘরও তাদের লাগে। যাদের সামর্থ্য নাই তাদের না দিয়ে নিজেরাই এসব লুটে নিয়েছেন। তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিৎ।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারব।
আরএইচ/এসআইএইচ