ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় ক্রেতাকে মারধর, থানায় মামলা
ছবি: সংগৃহীত
ক্রেতাকে ওজনে আঙুর কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় গুলশান-২ ডিসিসি সুপার মার্কেটে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। মূলত ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় বিক্রেতাদের মারধরে আহত হয়েছেন তিনজন।
এ ঘটনায় ক্রেতারা জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। শুক্রবার বিকেলে গুলশান-২ ডিসিসি সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত তিনজন হচ্ছেন- প্রকৌশলী এস এম তারিকুজ্জামান (ক্রেতা), তার ছোট ভাই এস এম শুআইব ও সহকর্মী রুবায়েত আজম। হামলার ঘটনায় এক ফল বিক্রেতাকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশ।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ফল কেনাকে কেন্দ্র করে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা এবং এর থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা একজনকে আটক করেছি।
আহত প্রকৌশলী এস এম তারিকুজ্জামান এডিফিস নামে একটি কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজ বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে।
আহত এই ক্রেতার ছোট ভাই ও মারধরের শিকার শুআইব বলেন, ডিসিসির ফুটপাত আঙুর কিনতে গেলে এক বিক্রেতা আমাদের ওজনে কম দেয়। ওজনে কমের কৌশলটা ধরে ফেলায় আশপাশের বিক্রেতাদের নিয়ে তিনি আমাদের নানা ধরনের কটুকথা বলা শুরু করে। রমজানে পণ্য ওজন কম দেওয়ার মতো চুরির প্রতিবাদ করায় তারা কয়েকজন আমাদের কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের (তারিকুজ্জামান) মাথায় ছয়টা সেলাই লেগেছে। হামলার খবর পেয়ে আমাদের উদ্ধার করতে এসে ভাইয়ার সহকর্মীও হামলার শিকার হয়েছেন।
এদিকে হামলা থেকে রক্ষা পেতে ৯৯৯ এ কল করেন আহতরা। পুলিশকে খবর দেওয়ার তথ্য জেনে দ্বিতীয় দফায় তাদের মারধর করা হয়েছে বলেও জানাান শুআইব।
তিনি বলেন, পুলিশ আসছে শুনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা ঘটনাটি মিটিয়ে ফেলতে বলে। আমার ভাই না মানায় দ্বিতীয়বার হামলা করা হয়। ঘটনা অন্যদিকে মোড় দিতে আমাদের চোর চোর বলে সম্বোধন শুরু করে বিক্রেতারা। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে এবং একজনকে আটক করে।
এ হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী তারিকুজ্জামান বাদি হয়ে মামলার আবেদন করেন। বাদীপক্ষ ঘটনার দিন বিকাল ৫ থেকে অপেক্ষা করে রাত ১২.৪৫ এর দিকে মামলা নেয় পুলিশ (বাদীপক্ষের মামলা নম্বর গুলশান ২১/৬৯)। শ্রমিকলীগ নেতা বাশারসহ অন্য আসামিরা হলো- শামীম খান, রানা সরদার, মো. কেরামত ওরফে সাগরসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জন।
এরপর ৩০ মিনিট পরেই বিবাদীপক্ষ মামলা দেয় এবং পুলিশ তা গ্রহনও করে (বিবাদীপক্ষের মামলা নম্বর গুলশান ২২/৭০)। স্থানীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেয়া বাশার নামের এক ব্যক্তির কারণে মামলা নিতে গড়িমসি করার খবর পাওয়া গেছে।
ক্রেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার পরেও অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেওয়ার বিষয় জানতে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহানুরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাকে বারবার কল দেওয়া হলেও তিনি সারা দেন নি।