নিহতদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে ঢামেক চত্বর
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখানেই সকাল থেকে প্রিয়জনের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ মানুষজনের আত্মীয়-স্বজন। আবার পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর সকাল থেকে মরদেহ নিয়েও যাচ্ছেন অনেকে। মরদেহের অপেক্ষায় থাকা এসব স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনের চত্বর।
শুক্রবার (১ মার্চ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে জরুরি বিভাগ এবং বার্ন ইউনিটের সামনে স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। অনেকেই প্রিয়জনের স্মৃতি স্মরণ করে করছেন বিলাপ।
আগুনে নিহত কাচ্চি ভাইয়ের কর্মচারী পটুয়াখালীর জুয়েলের স্ত্রী রেবা আক্তার বলেন, রাত দশটা পাঁচ মিনিটে সব শেষ কথা হয়েছিল। এরপর অনেক ফোন করেছি, কিন্তু ফোন রিসিভ করেননি। এখন স্বামীর মরদেহ পেলাম। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল ৯টায় ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ২৫ জনের মরদেহ স্বজনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া বেশ কয়েকটি মরদেহ হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। মরদেহ হস্তান্তর কার্যক্রম সহজ করতে জরুরি বিভাগের সামনে ঢাকা জেলা প্রশাসনের তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের সেই ভবনে আগুনের খবর পাওয়া যায়। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ টি ইউনিট।
রাতে নিখোঁজদের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। এ সময় ভিড় করেন উৎসুক জনতাও। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছোটাছুটি খোঁজ-খবর নিতেও দেখা যায় স্বজনদের।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছিল। আমাদের দেখা মতে ভবনের অন্যান্য ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। যেগুলোতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছি। যে কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে এবং দাউদাউ করে জ্বলেছে।
এদিকে ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ হতাহত বেশি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।