বেইলি রোডের আগুন
মা'সহ পুড়ে মারা গেল ছোট্ট আয়ান ও আয়াত
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে মোট ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৩ জন রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মা ও ছোট্ট দুই শিশু।
জানা গেছে, দুই সন্তান আয়ান (৮) ও আয়াতকে (৬) নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বেইলে রোড এলাকায় থাকতেন নাজিয়া আক্তার (৩১)। তার স্বামী মো. আশিক পেশায় ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় ব্যবসার কাজে বনানীতে যান তিনি। সে সময় দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ওই ভবনের তৃতীয় তলার একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান নাজিয়া। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বামীকে ফোন দিয়ে আগুনের ঘটনা জানান।
পরে তৃতীয় তলার সিঁড়ি থেকে আয়ানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগুনে নাজিয়া ও আয়তও মারা যায়। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তাদের মরদেহ রাখা হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছেন নাজিয়ার আত্মীয় রিফাত হোসেন। ঘটনার সময় ওই ভবনের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ ভবনটির নিচতলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পান। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের সেই ভবনে আগুনের খবর পাওয়া যায়। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ টি ইউনিট।
রাতে নিখোঁজদের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। এ সময় ভিড় করেন উৎসুক জনতাও। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছোটাছুটি খোঁজ-খবর নিতেও দেখা যায় স্বজনদের।
আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ১ জন, ঢামেক হাসপাতালে ৩৩ জন ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জনের মরদেহ রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছিল। আমাদের দেখা মতে ভবনের অন্যান্য ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। যেগুলোতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছি। যে কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে এবং দাউদাউ করে জ্বলেছে।
এদিকে ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ হতাহত বেশি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।