রাজধানীর গুলশান শপিং সেন্টার ৩০ দিনের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবাদুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর গুলশান শপিং সেন্টার ৩০ দিনের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে শপিং সেন্টারটি ভেঙে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে বাণী চিত্র ও চলচ্চিত্র নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। ২৩ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ান ও মাহবুব হাসানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শপিং সেন্টারটি সিলগালা করে দেয় ডিএনসিসি।
জরাজীর্ণ হওয়ায় এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় ২০২১ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর গুলশান শপিং সেন্টারের ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে তারা ডিএনসিসিকে ব্যবস্থা নিতে বলে।
গোবিন্দগঞ্জের সাবেক এমপি আতাউর রহমান বেলাল। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান বেলাল আর নেই। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নাকাইহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুপুর ২টায় পাটোয়া (সরকারপাড়া) গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আতাউর রহমান বেলাল ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গোলাপ ফুল প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তার মৃত্যুতে গোবিন্দগঞ্জবাসী একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারাল।
নুরুজ্জামান কাফির পরিবারের পাশে সেনাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত
দেশের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির পরিবারকে সহায়তা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তার বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সেনা সদস্যরা তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামে কাফির আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়ি পরিদর্শন করেন পায়রা আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা। তারা কাফি ও তার পরিবারকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান এবং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কাফির গ্রামের বাড়িতে আকস্মিকভাবে আগুন লেগে যায়, যা মুহূর্তেই পুরো ঘর ভস্মীভূত করে ফেলে। কাফি দাবি করেছেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হামলা।
ঘটনার পর বুধবার দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাফি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে জড়িত। তিনি প্রশাসনকে সতর্ক করে বলেন, “আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি আমার ঘর পুনর্নির্মাণ এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে বিপ্লবী সরকারের ডাক দেওয়া হবে।”
ছবি: সংগৃহীত
অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জেলা পুলিশ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
পরিদর্শন শেষে পায়রা আর্মি ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার বলেন, “এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, কাফি ও তার পরিবার ন্যায়বিচার পায়। এজন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সেনাবাহিনীর সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নুরুজ্জামান কাফি বলেন, “ইতোমধ্যে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। আমি প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই। আমি বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সরকারের কাছে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা চাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। সেইসঙ্গে আমি আমার সাত দিনের আল্টিমেটামের বিষয়ে অনড় আছি।”
সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ আর না ঘটে।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় আহত আবুল কাশেমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটি আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত আবুল কাশেমের জানাজা ওইদিন রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল বের করা হবে।
এছাড়া, সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রামে শহীদ আবুল কাশেমের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে খাটিয়া মিছিলের কর্মসূচিও পালন করা হবে। স্থানীয়ভাবে নির্ধারিত সময়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। বুধবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, #Ban_Awami_League।
এর আগে, আরেকটি পোস্টে তিনি বলেন, "আয়নাঘর, হাসিনার হত্যা, আমার ভাই শহীদ কাশেমের মৃত্যুতে প্রতিবিপ্লব শুরু হয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে, আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।"
উল্লেখ্য, গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুরের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন ২০ বছর বয়সী আবুল কাশেম। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক।
আবুল কাশেমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এবং দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে।