গলায় ঝুলছে ই-টিকিটিংয়ের পজ মেশিন, ভাড়া নিচ্ছে ম্যানুয়ালি!
রাজধানীর প্রায় সব রুটের চলাচলকারী পরিবহনে ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের নিয়ম করা হলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। সরজমিনে দেখা গেছে, অনেক পরিবহনে এখনো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে এনালগ পদ্ধতিতে। যদিও বাস কাউন্টার মাস্টারদের গলায় ঝুলছে পজ মেশিন কিন্তু বাসের কন্ডাক্টররা ভাড়া নিচ্ছে ম্যানুয়ালি।
যাত্রীদের অভিযোগ, আগের নিয়মে সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল ৫ থেকে ১০ টাকা বর্তমানে সেটা করা হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অনেক সময় বাসের টিকিট মাস্টার ১০ টাকার ভাড়ার পথ কেটে দেয় ২০ টাকা। এই সিস্টেম অনেক যাত্রী বোঝেন না যার কারণে অনেকেই বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর নিউমার্কেট আজিমপুর সায়েন্সল্যাব এলাকায় সরেজমিনে ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হলে এই নিয়মের বেশ কিছু ভোগান্তির চিত্র উঠে এসেছে।
মিরপুর থেকে মিরপুর মেট্রো সার্ভিস বাসে আজিমপুর এসেছেন সুমন হোসেন। তিনি বলেন, ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায় করছে না পরিবহনের লোকজন। যদিও তাদের গলায় ঝুলছে পজ মেশিন কিন্তু বাস সংশ্লিষ্টরা ভাড়া নিচ্ছে ম্যানুয়ালি। যার কারণে এই পদ্ধতিতে স্বস্তি ফেরেনি।
সায়েন্সল্যাব হয়ে মালঞ্চ পরিবহন চলাচল করে গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকা দিয়ে। এই পরিবহনের যাত্রী সবুজ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ধূপখোলা থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত ভাড়া নেয় ৪০ টাকা। তিনি বলেন, আগে এর ভাড়া ছিল ২৫ টাকা মাঝে মাঝে তারা ৩০ টাকা চাইত।
সায়েন্সল্যাব থেকে মালঞ্চ পরিবহনে ওঠেন কলেজ ছাত্র সুমিত দত্ত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগে মতিঝিলে যেতাম ১০ টাকা দিয়ে। এখন স্টুডেন্ট ভাড়া হলো ২৫ টাকা। ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
সায়েন্সল্যাব এলাকায় কথা হয় তৌসিফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাড়িতে উঠলেই পরিবহনের নৈরাজ্য চোখে পড়ে। আমি ঠিকানা পরিবহনে আজিমপুরে আগে গিয়েছি ১০ টাকায় এখন সেই ভাড়া মেশিন এর মাধ্যমে দিতে হয় ২৫ টাকা। পরিরহনের ই-টিকিটিংয়ের সিস্টেম মানুষের গলা কাটছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ই-টিকিটিং বেশিরভাগ পরিবহনেই পজ মেশিন নেই। আবার অনেক বাসে নগদে টাকা নেওয়া হচ্ছে।
কথা হয় বিকাশ পরিবহনের যাত্রী নাজমুল, ভিআইপি-২৭ এর এক যাত্রী ও দেওয়ান পরিবহনের যাত্রী তালিবের সঙ্গে। তারা বলেন, পরিবহনে ই-টিকিটিংয়ের যেমন সুবিধা আছে তেমনি বেশ কিছু অসুবিধাও আছে। ভালো মতো মনিটরিংয়ের দরকার। পজ মেশিন বসানো দরকার।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সারা ঢাকায় প্রায় সব গণপরিবহনে ই-টিকিটিংয়ের মনিটরিং করা হচ্ছে। এজন্য একটি অভিযোগ সেল গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিদিন এসব অভিযোগ আমলে নিয়েই কাজ করে থাকেন। ই-টিকিটিং নিয়ম চালুর পর পরিবহনের চালকদের ও হেলপারদের বেতন অনেক বাড়ানো হয়েছে। যাতে করে তারা যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন। পরিবহনের সঙ্গে যারা যুক্ত আছে তাদের বিভিন্নভাবে কাউন্সিলিংও করা হচ্ছে আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। আমরা যাত্রীদের সব অভিযোগ আমলে নিয়েই কাজ করে থাকি।
কেএম/এসএন