‘এত বিকট শব্দ জীবনেও শুনিনি। পুরা রাস্তা কেঁপে উঠেছে’

‘এত বিকট শব্দ জীবনেও শুনিনি। পুরা রাস্তা কেঁপে উঠেছে! মানুষ ভয়ে দৌড়াতে থাকে। এসে দেখি রাস্তায় রক্তাক্ত মানুষ পড়ে আছে। সারা রাস্তায় কাঁচের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। রক্ত দেখে আমার মাথা ঘুরে উঠেছে।’
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে ঘটনার এমনটায় বিবরণ দিয়েছেন সিদ্দিক বাজারের স্থানীয় দোকানদার বজলু মিয়া। বজলু মিয়া তার এক পরিচিতের সন্ধানের জন্য মর্গে এসেছেন। পরে তিনি শুনতে পান পরিচিত ব্যক্তি বেচেঁ আছেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বজলু মিয়া বলেন,’ঘটনাস্থলে গিয়ে আগে কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমিসহ কয়েকজন মিলে কিছু মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারে ঘটনা স্থলে ফায়ার সার্ভিস আসে।
রাজধানীর গুলিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু হতাহতের পর এ নিয়ে হৃদয়বিদারক অনেক বর্ণনা উঠে আসছে এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে। ঠিক রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের নর্থ-সাউথ রোডের ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন আশেপাশের লোক। এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে এ বিস্ফোরণ ঘটে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেলে কথা হয় ঘটনাস্থলের অপজিটের আরেক দোকানদার মো নাজিরের সঙ্গে এ সময় তিনি বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। মানুষ চিৎকার আর চেচামেচি করতে থাকে। পরে গিয়ে দেখি রাস্তায় অসহায় পড়ে আছে অসংখ্য মানুষ। কেউ বলছে, বাঁচাও আবার কেউ নড়াচড়া করছে না। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে মানুষদের বাঁচানোর চেষ্টা করে।
মারা যাওয়া এক ব্যক্তির বোন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের এক লোক ফোন করে বলেন, আপনার ভাই খুব অসুস্থ সে ঢাকা মেডিকেলে আছেন। এসে ভাইকে পাচ্ছি না। এজন্য মর্গে আসছি। জানি না আমার ভাই বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, আল্লাহ জানেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বিস্ফোরণের সময় রাস্তায় যারা ছিল তাদের অনেকে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।
কীভাবে এই ঘটনাটি ঘটেছে জানতে চাইলে সিসিটিসি প্রধান খন্দকার মহিউদ্দিন বলেছেন, এ ধরনের বিস্ফোরণে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলা যায় না। বিস্ফোরণের আসল কারণ জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে। তদন্তের পর সব ভালো ভাবে জানা যাবে।
কেএম/এমএমএ/
