বহুতল ভবনের সংজ্ঞায়ন ও বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি গঠনের দাবি আইপিডি’র
অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহুতল ভবনের সংজ্ঞায়ন সুস্পষ্ট করার পাশাপাশি অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের বর্ষপূর্তির সময়ই গুলশান এলাকার বহুতল আবাসিক ভবনের ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের নগর এলাকায় অগ্নিদুর্যোগে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কার বিপরীতে আমাদের ভবনগুলোর অভ্যন্তরীণ অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার সীমাহীন দুর্বলতা ও নগর সংস্থাগুলোর সার্বিক পরিকল্পনা, প্রস্তুতি, নজরদারি ও আইনের প্রয়োগের দুর্বলতার বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে বলে মনে করে আইপিডি।
তুরস্ক-সিরিয়ার সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্প দুর্যোগে ব্যাপক প্রাণহানির কারণে আমাদের নগরগুলোর ভূমিকম্পসহ সার্বিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতির ব্যাপক ঘাটতির বিষয়গুলো সাম্প্রতিক সময়ে জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডসহ অতীতের নগর দুর্যোগের ফলে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো আমরা কেন বাস্তবায়ন করতে পারিনি, সেই বিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্ববহ। নগরে মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়ার নীতিমালা থাকলেও অদৃশ্য কারণে সেই প্রস্তাবনাগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না বলে মনে করে আইপিডি।
তুরস্কের ভূমিকম্প দুর্যোগের পরে দেখা যাচ্ছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ভঙ্গ করে যেসব ডেভেলপার, আবাসন ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তারা বহুতল ভবন নির্মাণ করেছিলেন এবং পরবর্তীতে জরিমানা দিয়ে সেগুলোকে বৈধ করে নিয়েছিলেন সেসব ভবনগুলোই দুর্যোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনগুলো অবজ্ঞা করে বহুতল ভবনের নির্মাণ ও ব্যবহার চলছে। এসব ভবন অগ্নিসহ বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বর্তমানে ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকায় ব্যবসায়িক লাভকে বাড়ানোর অসদুদ্দেশ্যে বিকল্প সিঁড়ি ও নির্গমন পথ, ফায়ার লিফট, ফায়ার ডোর, ফায়ার ডিটেক্টর, ফায়ার স্প্রিংক্লার, ফায়ার সাপ্রেশন সিস্টেম ইত্যাদি অগ্নিনির্বাপণ সিস্টেমের যথাযথ ব্যবস্থা না করেই বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো ধরনের অকুপেন্সি সনদ ছাড়াই এই ভবনগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি রাজধানীর এফআর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডের পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সরেজমিন তদন্তের পর বহুতল ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভবন মালিক ও ডেভেলপারদের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেগুলোর বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করা হয়েছিল কি না সেটাও নিশ্চিত করা যায়নি।
আরইউ/এসজি