ঢাকায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ৯০ শতাংশই নকল: গোয়েন্দা পুলিশ
ঢাকায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ৯০ শতাংশই নকল বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর ডিএমপির ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর আমরা এ তথ্য জানতে পেরেছি।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
পুলিশ জানায়, সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২) দুই সন্তানের জনক। আপাদমস্তক সুস্থ। অথচ বেশ ধারণ করেন তৃতীয় লিঙ্গের। শুধু চাঁদাবাজি নয়, অপহরণ করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কাজল ওরফে সজনি চক্রের বিরুদ্ধে।
ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন আরও বলেন, রাজধানীতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ৯০ শতাংশই নকল। শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনই এক চক্রের ছয় সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২), নাছির (৪২), আমানুর মন্ডল (৪২), রাজু (২৬), আব্দুর রহমান (৩৬) ও হৃদয় মিয়া (২২)।
তিনি বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি বিকালে রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (১৬) ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের খপ্পরে পড়েন। পরে তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একজন পতিতার সঙ্গে ছবি তুলে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে। পরে ওই শিক্ষার্থী থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। এরপর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের বেশ ধারণ করা চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ।
ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির প্রধান কাজল ওরফে সজনি হিজড়া। তার আসল নাম সোহাগ। দুই সন্তানের জনক সোহাগের রয়েছে সাত থেকে আটজনের চক্র। তারা রাজধানীতে চাঁদাবাজিসহ মানুষকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন।
ডিসি বলেন, রাজধানীতে ৯০ শতাংশ নকল তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও সোহাগের চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি চাঁদাবাজির টাকা চড়া সুদে ঋণ দেওয়ারও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ জানায়, দেশে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে হিজড়া বলা হয়। সত্যিকার অর্থে যারা তৃতীয় লিঙ্গের তাদের অভিযোগ, রাজধানীতে অনেক নকল হিজড়া আছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।
গোয়েন্দাদের দাবি, সজনি হিজড়া তার মতো আরও ৭ থেকে ৮ জনকে নিয়ে তৈরি করেন নকল হিজড়া গ্রুপ। তারা রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট থেকে শুরু করে যেখানে-সেখানে টাকার জন্য মানুষকে নাজেহাল করে থাকে।
নকল হিজড়াদের বিরুদ্ধে আমাদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এসআইএইচ
