‘কৃষকের বাজার স্থায়ী ও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন’
ঢাকাবাসীকে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২টি কৃষকের বাজার চলমান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর, সিটি করপোরেশন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাজারগুলো স্থায়ী করা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, বাজারগুলো স্থায়ী ও সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। এ মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন সিনিয়র সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাকিলা পারভীন, নিজামুল হক বিপুল, নিখিল চন্দ্র ভদ্র, মিজান রহমান, শাহজাহান মোল্লা, মান্ডি ডি কস্টা, আল ফাতাহ মামুন, ইয়াহিয়া নকিব ও সৈয়দ ঋয়াদ প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, অ্যাম্বাসি অব দ্য কিংডম অব দ্য নেদারল্যান্ডস, সিটি করপোরেশন এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এই কৃষকের বাজার স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এই বাজারে কৃষকরা তাদের পণ্য সরাসরি এনে ভোক্তার কাছে বিক্রি করে। এতে মধ্যসত্ব্য ভোগী না থাকায় সঠিক দামে পণ্য বিক্রি হয়। এই বাজারের মাধ্যমে ভোক্তারা সতেজ ও কীটনাশক মুক্ত শাক সবজি পেয়ে থাকেন এবং কৃষকেরা লাভ্যংশ পাচ্ছেন।
সাভার, বিরুলিয়া, কামরাঙ্গীরচর, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন জায়গার কৃষকরা এই বাজারের বিক্রেতা। যেসব কৃষকরা এখানে আসেন, তারা উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২টি এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে বসে ২টি করে মোট ১৬টি বাজার রয়েছে। ওই সকল এলাকায় পরিচালিত জরিপে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ মানুষ এই বাজার সম্পর্কে ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।
ক্রেতারা অনেকেই সপ্তাহে শুধুমাত্র একদিন নয়, প্রতিদিন বাজার বসাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাই এই বাজারকে সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন।
সভায় বক্তারা বলেন, কৃষকের বাজার ভোক্তাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। এ বিবেচনায় বাজারগুলো স্থায়ী করা প্রয়োজন। যেহেতু বাজারগুলো সিটি করপোরেশন এলাকায় পরিচালিত হচ্ছে, সেহেতু স্থানগুলো সুনির্দ্দিষ্ট করার লক্ষ্যে স্থানীয় কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের ভূমিকা এবং প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্প দিয়ে বাজার স্থায়ী করা সম্ভব নয়।
সিটি করপোরেশনের কাছে বাজারগুলো হস্তান্তর করা হলে আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতের মাধ্যমে বাজারগুলো সহজেই টেকসই হবে।
বক্তারা বলেন, প্রকল্প শেষ হওয়ার পরেও বাস্তবায়নকারী সংস্থা বা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বাজারগুলো নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন। কৃষি এলাকার কাছাকাছি কৃষকের বাজারগুলো তৈরি করা হলে কৃষকরা বেশি উপকৃত হবেন।
পরিবহন কৃষকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। সমবায় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবহনের ক্ষেত্রে সমাধান নিয়ে আসা সম্ভব। এ ছাড়া, জনগণের চাহিদা বিবেচনায় মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকেই কৃষকের বাজার স্থায়ীকরণে উদ্যোগী হতে হবে।
এনএইচবি/এমএমএ/