জমে উঠেছে পার্বত্য মেলা
পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও এ মেলার আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মেলায় স্টলসমূহের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী, প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী, তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী, হস্ত শিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাদ্যদ্রব্যের স্টল রয়েছে।
রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ মেলায় গিয়ে দেখা যায়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিভিন্ন ধরনের পণ্যের সমাহার ঘটিয়েছে মেলায়। মেলায় ঢুকতেই বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্টল। পাহাড়ি আখের গুড়, আখের রস ও আচারসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে স্টলে।
এর পাশেই দেখা গেল নৌকার ওপর পতাকাশোভিত দৃষ্টনন্দন একটি স্টল। নৌকার ওপর বিভিন্ন পাহাড়ি ফল প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই স্টলটি মূলত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের। ‘জুম ফুড’ নামে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের স্টলটিতে মূলত রাঙামাটিতে উৎপাদিত অর্গানিক ফসলের প্রদর্শন করা হচ্ছে।
জুম ফুডের পাশেই রয়েছে ‘হেইচাং ফুড ওয়ার্ল্ড’ এর স্টল। দোকানি আদিবাসী তরুণী জানালেন, তার দোকানে ফল, আচারসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী রয়েছে। এসবই অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত। তার পাশের দোকানটিও মূলত অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফলের দোকান।
হেইচাং ফুড ওয়ার্ল্ড এর স্টলটিতে পাহাড়ি নানান পদের পিঠা প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই স্টলটি খাগড়াছড়ি অঞ্চলের। দোকানি বললেন, এসব পিঠা আসলে তাদের সংস্কৃতিকেই তুলে ধরছে। দেখা গেল পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী বাঁশ চিকেনও বিক্রি হচ্ছে।
পাহাড়ি ব্র্যান্ড ‘হেবাং’ এর একটি স্টল দেখা গেল। এটিও খাবারের দোকান। পাহাড়ি নানা পদের খাবার দেখা গেল স্টলটিতে।
স্টলটির সামনে একটি মূল্য তালিকা টাঙানো রয়েছে। এখানে ভাত ৪০ টাকা। পাজন (মিক্সড সবজি) ১০০ টাকা, কাঁকড়া ফ্রাই ১৫০ টাকা, চিকেন হোরবো ১২০ টাকা, চিকেন ফ্রাই ১০০ টাকা, বিন্নি চালের পায়েস ৫০ টাকা। এছাড়া স্টলটিতে পাওয়া যাচ্ছে বিরানি (ডাবলিবুট), রোজেলা চা, হেবাং স্পেশাল ও বড়াপিঠা।
‘পিবির’ নামে একটি স্টলে দেখা গেল পাহাড়ি নানা হস্তশিল্পের কারুকাজ সম্বলিত চাদর, শাল, ও শাড়ি। একই দোকানে বিক্রি হচ্ছে বাহারি আচারও।
মেলায় এমন ৯১টি স্টলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি প্রদর্শিত হচ্ছে। বুধবার (৫ জানুয়ারি) মেলা উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
মেলা শেষ হবে ৮ জানুয়ারি। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মেলা শুরু প্রতিদিনি সকাল ১০টায়। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে পাবর্ত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
আরইউ/এএস