২৪ ঘণ্টায়ও পানি অপসারণ করতে ব্যর্থ ডিএনসিসি!
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকাধীন কয়েকটি ওয়ার্ড পানিতে নিমজ্জিত হয়। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর এলাকার নবোদয় হাউজিং, শেকেরটেক, আদাবর এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নতুন ওয়ার্ডগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনো ঐসব এলাকা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ছয়টার সময় মোহাম্মদপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অনেক বাড়ির নিচ তলায় এখনো হাঁটু পানি।
বড় বিপাকে পড়েছে টিনশেড ও বস্তিবাসী। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে যায়। ড্রেন ও খালের ময়লা আবর্জনামিশ্রিত এই পানি মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর কর্মীদের সেভাবে দেখা যায়নি। বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও তার কর্মীদের মাঠে উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
পানিবন্দি মানুষগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডের প্রতি। নবোদয় হাউসিংয়ের বাসিন্দা অসিত কুমার হালদার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ঢাকা সিটির মতো একটা জায়গায় বসবাস করেও ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির পানি অপসারণ করতে পারে না।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাসও দিতে পারে না এটা খুবই দুঃখজনক। অন্য সময় মেয়র মহোদয় দেখেছি নিজে ড্রেনের ভেতরে নেমেও পরিদর্শন করেছেন। তাহলে সেগুলো কি শুধুই লোক দেখানো ছিল? টিনশেড বাসার মানুষগুলো সারাদিন না খেয়ে আছে। কেউ একবার খোঁজ নিতেও আসেনি, যোগ করেন তিনি।
একই অভিযোগ তোলেন শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের সি/৩২ নম্বর বাড়ির মালিক আনিসুর রহমান। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সারাদিন চলে গেল সিটি করপোরেশনে কোনো লোককে দেখলাম না। এভাবে হাঁটু পানি, কোমর পানি ভেঙে মানুষ কত দুর্ভোগে আছে কেউ কোন খোঁজ নিচ্ছে না। কখন পানি অপসারণ করা হবে তাও কেউ বলতে পারছে না।
‘আমার বাড়ির গ্যারেজে পানি ঢুকেছে। সেখানে পানির মোটরের পানি ঢুকে বিকল হয়ে পড়ে আছে। ভাড়াটিয়াদের খাবার পানি দিতে পারছি না কীভাবে কী করব সেটা বুঝতে পারছি না। ঢাকা সিটির মতো জায়গা যদি এ রকম হয় তাহলে অন্যান্য জায়গায় কী অবস্থা?’
শেকেরটেক নবোদয় হাউজিং এলাকার জলবদ্ধতা নিয়ে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘টেকিং অ্যাকশন।'
তিনটার দিকে পুনরায় জানানো হয় এখনো পানি অপসারণ হয়নি জবাবে মেয়র জানান ‘পাম্প রানিং অন’।
এরপর বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও পানি সেভাবে অপসারণ হয়নি। এখনো পুরো এলাকায় হাঁটু পানির নিচে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল-ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের কাজ চলমান। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ পাম্প এর মাধ্যমে পানি সেচে বেড়িবাঁধ এর ওপারে ফেলা হচ্ছে।
যেখানে পানি ফেলা হচ্ছে সেই জায়গাও পানির লেভেল এত উপরে যে পাম্প করেও পানি অপসারণ করা যাচ্ছে না। এ জন্য ঠিক কখন পুরোপুরি অপসারণ করা যাবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশা করি আর যদি বৃষ্টি না হয় রাতের মধ্যেই সমস্ত পানি অপসারণ করতে পারব, যোগ করেন তিনি।
এসএম/এমএমএ/