পল্লবী থানার ওসির গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
রাজধানীর পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম নিজে ও তার নির্দেশে প্রতিনিয়ত পল্লবী থানা এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষকে টাকার জন্য মিথ্যা মামলা, হামলা ও বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগ এনে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশের করেছে রাজধানীর পল্লবীতে বসবাসরত ভূক্তভূগী পরিবার সমূহ। তবে পুলিশের দাবি, এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার ফলে স্থানীয় মাদক কারবারিরা এমন অভিযোগ এনেছেন।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে বিভিন্ন ভাবে পল্লবী থানা ওসির নির্যাতন ও নিপিড়নের শিকার ভূক্তোভুগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ওসি পারভেজ ইসলাম কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এই সময় পল্লবী থানার বর্তমান ওসি পারভেজ ইসলামকে তারা মানুষরূপী হায়েনার সাথে তুলনা করেন। তারা বলেন, এই হায়েনা যতদিন পল্লবী এলাকায় থাকবে পল্লবীর একজন ব্যক্তিও নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না। তাকে তার দাবীকৃত নির্দিষ্ট অংকের টাকা না দিলেই মিথ্যা মামলা, হামলা ও ডাকাতির শিকার হতে হবে। তাকে টাকা না দিলেই হিরোইন মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। পল্লবী থানা বর্তমানে যেন হিরোইনের মেলা হয়ে উঠেছে।
তারা আরও বলেন, এতো অপকর্ম করলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশের কেউ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ইতিমধ্যে পারভেজ ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও পুলিশ কমিশনার বরাবর অসংখ্য অভিযোগ জমা দেওয়া হলেও, তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে না। এমন কি যারা অভিযোগ দিচ্ছেন, তাদের নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে। ওসি পারভেজ ইসলাম গর্ব করে বলেন, কৃষ্ণপদ স্যার থাকতে আমার কিছু করার ক্ষমতা বাংলাদেশের কারো নেই।
এই সময় ওসি পারভেজ ইসলাম কর্তৃক নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী মোঃ পারভেজ তার উপর হওয়া হামলা ও নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, হেন্ডকাফসহ পালিয়েছিল পারভেজ নামে এক মাদক মামলার আসামী। পরে তাকে না ধরে, আমার বাসায় ওসির নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। ঘটনা লোপাট করতে বাসায় লাগানো সিসিটিভির ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং ডিভাইস নিয়ে যায়। যা উদ্ধার করলে সিসিটিভির ফুটেজে স্পষ্ট সব দেখতে পারবেন। তাছাড়াও আমার কাছে হামলার সকল আলামত ও ঘটনার সাক্ষী হিসেবে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। এই সময় ওসি আমার বাসায় থাকা স্বর্ণলঙ্কার ও আমার দোকানের ৬ লাখ টাকার শাড়ীসহ ১০ লাখ টাকার জিনিসপত্র ডাকাতি করে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমার বাসার অন্য সদস্যদের ধরে নিয়ে আরও টাকার জন্য অকথ্য নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে আমার ভাই ও বোন জামাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। আমি এই বিষয়ে পুলিশের সকল শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পাইনি। উল্টো প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছি। সেই সাথে ওসিকে আমার বাসায় আক্রমণের সাহায্য করার অভিযোগে আরেক ব্যক্তির নামেও আইজিপিসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়া হয়। এছাড়াও এসআই জহির ও তার সোর্স ডাকাতি ও আমাদের উপর নির্যাতনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। এসআই জহির ও এই নরপশু ওসিকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, পারভেজ একজন পেশাদার মাদকব্যবসায়ী। এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার ফলে তিনি এমন অভিযোগ এনেছেন।
এনএইচ/এএস