'দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের জবাবদিহিতায় আনার সময় এসেছে'
যারা বিদেশ থেকে সাহায্য, অনুদান এনে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের জবাবদিহিতায় আনার সময় এসেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। একই সঙ্গে দেশবিরোধী পরগাছাদের ষড়যন্ত্রের শিকল ভেঙে দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জুমবাংলা ইয়ুথ ফাউন্ডেশন আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্ধৃতি করে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশের মাটি খুবই খাঁটি। এখানে সোনা ফলে। সেই সঙ্গে পরগাছাও ফলে। অনেক সময় দেখা যায় ফসলের চেয়ে পরগাছা বেশি শক্তিশালী হয়ে যায়।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ৮০ শতাংশ। ২০০৯ সালে যখন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসে তখন দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৭ ভাগ। এখন দারিদ্র্যের হার ২০ ভাগ। চরম দারিদ্র্যের নিচে বসবাস করে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ।
জুম বাংলার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আইজিপি বলেন, 'আমরা সবাই মিলে এ কাজটি করতে পারলে পথ শিশু নিয়ে কথা বলতে হতো না। আপনারা যে শিশুদের পরিচর্যা দিয়ে যাচ্ছেন একদিন তারা দেশের বোঝা না হয়ে পুঁজি হিসেবে বিকশিত হবে। বিত্তবানরা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যত এগিয়ে আসবেন ততই দেশের উন্নতি হবে।
আইজিপি এ সময় প্রতি মাসে তার বেতনের একটি অংশ জুমবাংলাকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা। বক্তব্য রাখেন জুমবাংলা ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান, সহসভাপতি জেরিন সুলতানা। সভাপতিত্ব করেন জুম বাংলা ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রুহুল আমিন সেলিম।
পুনাক সভানেত্রী ফুলের মতো শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জুমবাংলাকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে জুমবাংলা স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ, চার শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র, শিক্ষা উপকরণ এবং উন্নতমানের খাবার বিতরণ করা হয়।
এর আগে আইজিপি, পুনাক সভানেত্রী ও অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে জুমবাংলার শীত উৎসব ২০২১ উদ্বোধন করেন। পরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জুম বাংলা স্কুলের ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, জুমবাংলা ইয়ুথ ফাউন্ডেশন একটি অলাভজনক সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটি পথ শিশু ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ, ইয়ুথ লিডারশিপ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, পরিবেশ সংরক্ষণ, ভলেন্টিয়ার ওয়ার্কশপ, আত্ম-কর্মসংস্থান, সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ, দেশাত্মবোধ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
সংগঠনটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ঢাকায় ছয়টি স্কুল পরিচালনা করে থাকে। এর মধ্যে তিনটি আনুষ্ঠানিক এবং তিনটি অনানুষ্ঠানিক। এ ছাড়া, ঢাকার বাইরে গাইবান্ধায় সংগঠনটির একটি আনুষ্ঠানিক স্কুল রয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বাইরে দশটি জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে জুমবাংলা ইয়ুথ ফাউন্ডেশন।
এনএইচ/এমএমএ/