আগের তুলনায় জলাবদ্ধতা ৭০ ভাগ কম হবে: মেয়র তাপস
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে দেখেছি বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস সৃষ্টি হতো বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমদিন থেকে কঠোরভাবে এই বিষয়ে বলেছি এবং ব্যবস্থা নিয়েছি। আজকে ঢাকা শহরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এই খোঁড়াখুঁড়ি। আমরা এটা হতে দিইনি। এবার ঢাকাবাসী সুফল পাচ্ছে। ফলে জলাবদ্ধতাও অনেকাংশে কমে যাচ্ছে। ২০২০ সালের যে জলাবদ্ধতা দেখেছি এই বর্ষা মৌসুমের প্রথমদিনে বলে রাখি ২০২২ সালে তার থেকে অনেক অনেক কম জলাবদ্ধতা হবে। প্রায় ৭০ ভাগ কম জলাবদ্ধতা হবে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। কোথাও যদি পানি জমেও আধ ঘণ্টার মধ্যে সেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারব।’
বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-৬ (মেট্রোরেল) এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেট্রোরেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকী।
মেয়র তাপস বলেন, আমাদের নীতিমালায় যেটা আছে মে মাস থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত কোনো খোঁড়াখুঁড়ি হবে না। আমাদের উপরে অনেক চাপ এসেছে অনেক প্রকল্প আছে কিন্তু আমরা এ ব্যাপারে অনেক কঠোর থেকেছি, যার কারণে এবার ঢাকাবাসী সুফল পাচ্ছে। এটার কারণে জলাবদ্ধতাও অনেকাংশে কমে যাচ্ছে। ২০২০ সালের যে জলাবদ্ধতা দেখেছি এই বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিনে বলে রাখি ২০২২ সালে তার থেকে অনেক অনেক কম জলাবদ্ধতা হবে। প্রায় ৭০ ভাগ কম জলাবদ্ধতা হবে। কোথাও যদি পানি জমেও আমরা আধা ঘণ্টার মধ্যে সেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারবো। সেই সকল প্রস্তুতি সেরকম কার্যক্রম ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি ঢাকাবাসীকে যত্রতত্র রাস্তায় নর্দমায় আবর্জনা ও নির্মাণ সামগ্রী না রাখার আহ্বান জানান।
এমআরটি লাইন ঢাকাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে অমূল্য উপহার উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প বাস্তবায়নের আর একটি পলক বলেন মুকুট বলেন সেই জিনিসটা হলো এমআরটি। আমরা শুধু স্বপ্ন দেখি না পূর্ণ বাস্তবায়ন করি যেমনি পদ্মা সেতু একটি নজির তার সঙ্গে সঙ্গে এমআরটি আর একটি বড় নজির। সময়বদ্ধ কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি প্রকল্পকে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা যায়। এমআরটি ঢাকাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে অমূল্য উপহার।
তিনি বলেন, ঢাকাবাসী যদিও রাজধানীর অধিবাসী কিন্তু আমি মেয়র হিসেবে মনে করে বা সেবক হিসেবে মনে করি আমরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। আমরা প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ এই ঢাকাতে বাস করি। উত্তর সিটি করপোরেশন এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মিলিয়ে। নাগরিক সুযোগ সুবিধা যেগুলো প্রাপ্য ছিল সেগুলো আমরা বঞ্চিত হয়েছি। শুধু মত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে চলেছেন।
মেয়র বলেন, আমরা যখন মেয়র নির্বাচন করি আমাদের ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল সচল ঢাকা সেই সচল ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে এমআরটি লাইন সবচেযে বেশি ভূমিকা পালন করবে। ঢাকাবাসীর প্রতিনিধিত্ব হিসেবে আমরা এখানে এসেছি। আমরা যা চিন্তা করি যা বলি যা করি ঢাকাবাসীর সেবা, নাগরিক সুবিধা তাদের প্রাপ্যতা নিয়ে যেটা সঠিক সেটা তুলে ধরি। সচল ঢাকা গড়তে এমআরটি লাইন চালু হওয়ার পর থেকে যানজট নিরসন অনেকাংশে কমে যাবে। তবে এমআরটির মাধ্যমে পূর্ণ যানজট নিরসন হবে না। এটা অবশ্যই বিশেষজ্ঞরা জানেন উপলব্ধি করে থাকেন এবং বলেও থাকেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণর আগে ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভলপমেন্ট (টিওডি) বিবেচনা করা উচিত। ১৭টি স্টেশন হবে সেই স্টেশনে বিপুল সংখ্যক মানুষ উঠা নামা করবেন সেই উঠানামাকে কেন্দ্র করে সেখানে যে প্রাণচাঞ্চল্য হবে সেই জায়গায় যদি সেই অবকাঠামোর সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো না করা যায় তাহলে সেখানে জট সৃষ্টি হবে। এই সমন্বয় বা অংশীজনদের সঙ্গে মত বিনিময় আগে করা যেত তাহলে সমাধান করতে পারতাম। এখন যে করা যাবে না, তা না কিন্তু এখন এটা সংকটে রূপ নেবে তারপর এটার সমাধানের দিকে যাবে। যে কোনো সংস্থা যখন বিভিন্ন প্রকল্প নেয় পরিকল্পনার সময় যেন সমন্বয় করা হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে বললেন মেয়র।
এসএম/এমএমএ/