ঢামেক হাসপাতালের বাথরুম থেকে ‘মাদকসেবী’ আটক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি বাথরুমকে ঘিরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকে হইচই। কেউ কেউ বলছেন বাথরুমের ভেতরে মরদেহ পড়ে আছে। আবার কেউ বলছেন হতে পারে একজন বোরকা পড়া।
অবশেষে জানা গেল একজন মাদক সেবী সেখানে বাথরুম করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে এই নিয়ে শুরু হয় জরুরি বিভাগের চারিদিকে হৈ চৈ, চিল্লাচিল্লি। খবর পেয়ে সেখানে আসেন সরকারি স্টাফ, ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমানসহ অন্যান্য লোকজন।
শনিবার (২১ মে) গুঞ্জন ওঠে ঢামেক জরুরি বিভাগে প্রবেশের বাম দিকে একটি ট্রলি রুমের পাশে বাথরুমে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় কেউ পড়ে আছেন।
কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ঘণ্টাব্যাপী দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।পরে স্টাফদের পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশকে। এরই মধ্যে অনেকে বাথরুমের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন অনেকে। তারা একেক জন একেক ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন। কেউ বলেন বোরখা পরা কোনো ব্যক্তি, আবার কেউ বলতে থাকেন লুঙ্গি ও কালো রঙের বোরকা পরা।
পরে সেখানে অবস্থান নেন হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। তিনিও নিজ কর্তব্য থেকে একটুও পিছপা হতে চাননি। সঙ্গে থাকা ওয়ারলেস সেট বের করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একটি বাথরুমের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। ভেতরে কেউ পড়ে আছেন। হয়তোবা মারা গেছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে তিনি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হককেও বিষয়টি জানান। এরই মধ্যে সেখানে শতাধিক লোক জড়ো হন। সরকারি স্টাফদের পাশাপাশি রোগীর স্বজনরাও সেখানে অবস্থান নেন। তাদেরও কৌতুহল জাগতে থাকে আসলে বাথরুমে কী পড়ে আছে, মরদেহ না অন্যকিছু।
কিছুক্ষণ পরে ঢামেক পুলিশক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, পুলিশের নির্দেশনাসহ হাসপাতাল থেকে নির্দেশ পেয়েছি বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলার জন্য। এটা বলার সঙ্গে হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ পুলিশের উপস্থিতিতে বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পায় কালো রঙের একটি পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পড়া এক যুবক দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। পরে সেখান থেকে মনির হোসেন নামে ওই যুবককে জাগিয়ে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে বলেন, আমি বাথরুম করতে গিয়েছিলাম। ‘বাথরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কোনো হুঁশ ছিল না আমার।’
এই মাদক সেবীকে নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় সবাই আতঙ্কের মধ্যে ছিল। পুলিশ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, এরা হচ্ছে ভবঘুরে মাদকসেবী। মেডিকেলের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে আর মাদক সেবন করে। তারা হাসপাতালে বাথরুমকে মাদক সেবনের উপযুক্ত স্থান মনে করে নেয়। হাসপাতালের বেশির ভাগ বাথরুম থেকে প্রায়েই এদের ধরা হয়।
এএইচ/এমএমএ/