অবৈধ হাসপাতাল ও ভূয়া চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্যতে নাকাল অবস্থা রোগীদের
ব্যস্তময় রাজধানীতে ভূয়া চিকিৎসকের মাঝে আসল চিকিৎসক পাওয়া দায় হয়ে পড়েছে। ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে মহাসড়ক গুলোতে নিয়ম-নিতির তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠেছে হাজার হাজার হাসপাতাল ও অবৈধ চিকিৎসক। কোনো কোনো হাসপাতালের নেই লাইন্সেস, আবার কোনো গুলোর নেই সঠিক কাগজ।
লাইসেন্স ছাড়া ও ভূয়া চিকিৎসক দিয়ে অপচিকিৎসার অভিযোগে গেলো ২০২০ সালে রাজধানীর মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে সাজা দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিককে। কিন্তু জামিনে বের হয়ে আবারও হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করেন। বুধবার ভূল চিকিৎসায় এক শিশু মৃত্যুর পর এবার পলাতক তিনি।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির মূল দরজা বন্ধ থাকলেও পেছনের দরজা দিয়ে চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম। হাসপাতালটিকে রোগী দিতে সক্রিয় রয়েছে দালার চক্র। গণমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায় শুধু মক্কা-মদিনা নয় রাজধানীতে গড়ে উঠা অবৈধ হাসপাতাল গুলোর প্রায় একই অবস্থা। সরকারি হাসপাতালে রয়েছে তাদের দালাল চক্র। যারা রোগীদের ভুলভাল বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয় এগুলোতে।
নোয়াখালি থেকে বোনকে চিকিৎসা করাতে ঢাকায় নিয়ে আসে শরিফ বেপারী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালের সামনে এসেই বিপাকে পড়ে শরিফ বেপারী, এম্বুলেন্স দাঁড়াতেই সামনে হাজির চার থেকে পাঁচ জন দালাল। দালালদের প্রশ্নের মুখে শরিফ, কি হয়েছে রোগীর জানতে চাইলে শরিফ তাদের জানান, আমার বোনের পেটে টিউমার হয়েছে। টিউমারের কথা শুনে দালাল আকাশ তাদের ভালো একটি হাসপাতালে নিয়ে অপারশনের জন্য তাগিদ দেন। উন্নত হাসপাতাল ও ভালো মানের চিকিৎসক দিয়ে তার বোনের অপারশনের কথা শুনেও মন গলেনি শরিফের। দালাদের কথায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে, তাদের কথায় কান না দিয়ে বোনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালের ভর্তি করান শরিফ।
এসময় কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে শরিফ জানান, সরকারি হাসপাতাল গুলোতে দালালদের অত্যাচারে জর্জরিত মানুষ, রোগী বা তাদের স্বজনদের দেখলেই তাদের নানা অবৈধ হাসপাতালের কথা বলছে দালালরা। অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করছে এসব দেখেও না দেখার ভান করছে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসনের কাছে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধের জন্য জোর দাবি জানান শরিফ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে এসব সমস্যার সমাধানের দায় নিয়ে হবে সরকারকেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, অবৈধ হাসপাতাল ও ভূয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অবহ্যত আছে। এবং গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে রাজধানীসহ সারাদেশ অবৈধ হাসপাতাল ও ভূয়া চিকিৎসকদের তালিকা করা হচ্ছে। খুব তারাতারি এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএম/এএজেড