রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল

ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বিনোদন কেন্দ্রগুলো প্রায় বন্ধই ছিল। এবার করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকায় ঈদুল ফিতরের জামাতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি সব বিনোদন কেন্দ্রগুলো খোলা রয়েছে। যে কারণে রাজধানীর প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রেই তিল ধারণের ঠাঁই নেই অবস্থা।
মঙ্গলবার (০৩ মে) বিকালে ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন রাজধানীর শ্যামলী শিশুমেলায় গিয়ে দেখা যায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শুধু শিশু মেলায় নয় আসার পথে চন্দ্রিমা উদ্যান, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, সামরিক জাদুঘরসহ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
বিনোদনকেন্দ্রে আসা মানুষগুলোর মধ্যে ছিল উচ্ছ্বাসের সুর। তাদের কথায় বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পরে মানুষের ভেতরে যে উচ্ছ্বাস সেটিই প্রকাশ পেয়েছে।
শিশু মেলায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মাহমুদ হাসান। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ঈদে গ্রামে যেতে পারিনি। বাচ্চারা সারাদিন ঘরে বন্দি থাকে। অফিসের কাজের জন্য সেভাবে বাইরে বের হতে পারি না। এবার ঈদের ছুটি পেয়েছি, তাই ভাবলাম আজকে যেহেতু বিকালের আবহাওয়াটাও ভালো আছে বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও ঘুরে আসি। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে, তবে রাইডগুলোর যে মূল্য তাতে মধ্যবিত্তদের এখানে আসাটা দুরহ ব্যাপার।
তিনি বলেন, শিশু মেলায় প্রবেশ মূল্যই জনপ্রতি ১০০ টাকা। প্রবেশ মূল্যটা অনেক বেশি। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে প্রতিটি রাইড এর মূল্য ৫০ টাকা করে। যে কারণে একটা বাচ্চা যদি দশটি রাইডে চড়ে তাহলে তার জন্য প্রায় এক হাজার টাকা খরচ করতে হয়। কারণ বাচ্চারা একা একা রাইডে বসতে পারে না, সঙ্গে বাবা-মা কারো না কারো থাকতে হয়। যে কারণে প্রতিটি রাইডের জন্য মিনিমাম দুইটা টিকিট দরকার হয়।
বিষয়টি নিয়ে শ্যামলী শিশুমেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও সেখানে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। রাইড পরিচালনাকারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, এ সিদ্ধান্ত তো আমরা জানাতে পারব না। আমাদের পরিচালক আছেন তিনি ভাল বলতে পারবেন।
তবে রাইড মূল্য যাইহোক বছরের একটি বিশেষ দিনে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে অনেকেই কার্পণ্য করছেন না। শিশুমেলার যতগুলো রাইট রয়েছে প্রতিটিতেই মানুষের দীর্ঘ লাইন। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে অনেকে প্রবেশ করতে না পেরে গেট থেকে ফিরে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, চন্দ্রিমা উদ্যান লেকের পারে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খোলা বাতাসে ঘুরতে এসেছেন। একদিকে গাছের সবুজ পাতা অন্যদিকে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে নিজেরাও রঙিন হয়েছেন। লেট রোডের উভয় পাশেই মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায়। একই অবস্থা বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের সামনে। পাশের সামরিক জাদুঘরেও দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে সামরিক জাদুঘরটি বন্ধ থাকায় গেটের সামনে অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পরে সেখানে দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা জানান আজকে সামরিক জাদুঘর বন্ধ। সামরিক জাদুঘর বন্ধের নোটিশ অনেকে না জেনেই সেখানে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হন।
শুধু সামরিক জাদুঘর, নভোথিয়েটার, শিশুমেলা নয় যেখানে খোলা জায়গা পার্ক মাঠ রয়েছে প্রতিটি জায়গাতেই মানুষের উপস্থিতি। এভাবে প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্র ছিল উৎসবমুখর।
এসএম/আরএ/
