বুলবুল ছাড়া আমাদের ঈদের আনন্দ নেই: স্ত্রী শাম্মী

আজীবন ঈদের আনন্দটা পণ্ড হলো। বুলবুল ছাড়া এ প্রথম ঈদ আমাদের। তাকে ছাড়া আমাদের পরিবারের কোনো আনন্দ নেই। তিনি ছাড়া একেবারেই সবকিছু শূন্য লাগছে। ঈদ উপলক্ষে ছেলে মেয়েরা তাকে খুব মিস করছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ মে) এমন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মিরপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হওয়া দন্ত চিকিৎসক বুলবুলের স্ত্রী শাম্মী আক্তার।
শাম্মী বলেন, বুলবুল খুব ঠান্ডা প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। সবাই তাকে খুব পছন্দ করত। বুলবুল ফ্রিতেই অনেক মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতেন। আমরা ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খুব ভালো ছিলাম। বুলবুলকে ছাড়া আমাদের ভালো লাগে না। এই ঈদের দিনে আমরা ওকে খুব মিস করছি। আজ ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলে-মেয়েরাও তাদের বাবাকে খুব মিস করছে। বুলবুল ছাড়া ঈদ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে বড় মেয়েকে নিয়ে বাসার কাছেই মনিপুর স্কুলে যাচ্ছিলাম। এ সময় তার বাবা মো. ইয়াকুব এর ফোন 'মারে, বুলবুল আর নেই।' এরপর যেন আমার আকাশ ভেঙে মাথার উপর পড়ল।
তিনি বলেন, রিকশা নিয়ে প্রতিবেশী এক নারীর সহযোগিতায় দুই সন্তানকে কোলে করে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে দেখি সেখানে পড়ে আছে আমার বুলবুলের মরদেহ। এ ঘটনার জন্য একেবারে প্রস্তুত ছিলাম না। জীবন এমন আঁধার নেমে আসবে কখনো ভাবিনি।
তিনি বলেন, আমাদের বুলবুল ভালো থাকুক। আল্লাহপাক তাকে জান্নাত দান করুক সেই কামনা করি। তার আত্মার মাগফেরাত এর জন্য সবার কাছে দোয়ার প্রার্থনা করি।
বুলবুলের স্ত্রী শাম্মী আক্তার আরও বলেন, আমার স্বামী কিছুক্ষণ পরপর ফোন করে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। ভিডিও কলে বাবাকে দেখত ছোট্ট সামী। আর তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সে। এখনো বাবাকে পায় না আমাকে বিরক্ত করে কান্নাকাটি করে। দেড় বছর বয়সী সামীকে কী বুঝ দিব আমরা? সেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
এদিকে বড় সন্তান আমাদের আদরের মেয়ে আয়ন মন মরা হয়ে বসে থাকে সারাদিন। বাচ্চাদের মধ্যে ঈদের আনন্দ উল্লাস থাকে কিন্তু আমার দুই বাচ্চার মধ্যে কোনো আনন্দ-উল্লাস নেই আমাদের পরিবারে বুলবুল ছাড়া একেবারেই শূন্য।
প্রসঙ্গত, ২৭ মার্চ মিরপুরে ছুরিকাঘাতে নিহত হন ডাক্তার বুলবুল। এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
কেএম/এসএন
