নিউমার্কেটে সংঘর্ষে নিহত নাহিদের পরিবারে নেই ঈদ-আনন্দ

নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন ২০ বছর বয়সী নাহিদ হোসেন। নাহিদের পরিবার বলছে, তার রোজগার দিয়ে চলত পাঁচজনের সংসার। পরিবারটির কাছে শোকের পাশাপাশি এখন বড় প্রশ্ন, সংসার চলবে কীভাবে তাদের। অনেকে ঈদ উপলক্ষে সামান্য কিছু সহযোগিতা করেছে কিন্তু সেটা স্থায়ী নয়। নাহিদকে ছাড়া এই প্রথম ঈদ করছে নাহিদের পরিবার ও তার নবাগতা স্ত্রী ডালিয়া।
মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের দিন নাহিদের মা নার্গিস বেগম এবং তার স্ত্রী ডালিয়ার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
এ সময় তারা বলেন, নাহিদ ছাড়া আমাদের পরিবারে নেই কোনো ঈদের আনন্দ, আছে শুধু শোকের ছায়া।
নাহিদের মা নার্গিস বেগম বলেন, আমার তরতাজা পোলাডা কেমনে চলে গেল। আজ ঈদের দিন তাকে আমাদের পরিবারের সবাই মনে করছে। আমাদের ঈদের আনন্দ নেই বরং পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৌমা ডালিয়া সব সময় নাহিদের কথা বলে আর কান্নাকাটি করে।
নাহিদের ১৮ বছর বয়সী স্ত্রী ডালিয়া বলেন, নাহিদ খুব ভালো মানুষ ছিল। আজ ঈদের দিন নাহিদ আমাকে ঘুরতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু আমার ঘোরা হল না। নাহিদ জানি চিরতরে কোথায় হারিয়ে গেল।
ডালিয়া বলেন, ‘নিজের জন্য নাহিদ কিছু কিনতে চাইত না। একটা শার্ট, প্যান্ট, জুতা কিনত না। খালি আমাদের জন্য কেনাকাটা করত। এবার আমার জন্য অনেক মানুষ কেনাকাটা করে দিয়েছি কিন্তু তাতে কোনো তৃপ্তি নাই কারণ সেখানে নাহিদের কোনো অস্তিত্ব নেই।’
ডালিয়া আরো বলেন, আমার কোনটা লাগবে, কোনটা প্রয়োজন, সে সব সময় খোঁজ নিতো, আমাকে নিয়েই ভাবতো। এখন আমাকে নিয়ে কে ভাববে? এবার ঈদে নাহিদকে ছাড়া কীভাবে আনন্দ করবো?
দুই হাতভরা রাঙা মেহেদির নকশা এখনও মুছে যায়নি ডালিয়ার। তার বাঁ হাতের তালুতে মেহেদি দিয়ে লেখা, ‘আই লাভ ইউ নাহিদ।’ বিয়ের পর একটা ডালিয়ার প্রথম ঈদ। তিনি বলেন, নাহিদের অভাব কখনো পূরণ হবার নয়। ডালিয়া নাহিদের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
কেএম/এমএসপি
