তেঁতুলতলা মাঠ এখন পুলিশের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আমাদের কথা স্পষ্ট, আমাদের জায়গার প্রয়োজন। কলাবাগানের একটা থানা ভবনও প্রয়োজন। সেটার দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বলছি, যে জায়গা আমরা পেয়েছি এর চেয়ে যদি আরও ভালো কোনো সুইটেবল জায়গা মেয়র সাহেব বা অন্য কেউ ব্যবস্থা করতে পারেন তাহলে আমরা তখন সেটা কনসিডার করব। তবে আপাতত আমাদের থানার জন্য এটিই নির্দিষ্ট জায়গা। সরকারিভাবেও আমাদের কাছে হস্তান্তর হয়েছে। এটিই আমার বক্তব্য।
তাহলে এখানে থানা ভবনের নির্মাণ কাজ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্মাণকাজ হবে কি হবে না সেটা হচ্ছে পরের কথা। এই জায়গাটি পুলিশকে বরাদ্দ করা হয়েছে। এখন নির্মাণ কাজ হবে কি হবে না সেটা পরে ডিসিশন হবে। এখন বরাদ্দ যেহেতু হয়েছে সেই জায়গাটা এখন পুলিশের।
তাহলে এখানে আর মাঠ থাকল না…জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপাতত তাই। যেহেতু এটা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে সেহেতু পুলিশেরই।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) তেঁতুলতলা মাঠের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার সচিবালয়ের দপ্তরে দেখা করতে এসেছিলেন মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, বেলা’র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থপতি ইকবাল হাবিবসহ চার জন।
তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, তেঁতুলতলা কোনো সময়ই মাঠ ছিল না। এটা অ্যাবানডেন্ট (পরিত্যক্ত) প্রপার্টি ছিল। খালি জায়গা ছিল। এটা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন একটা অ্যাবানডেন্ট সম্পত্তি ছিল।
ঢাকা শহরেই আমাদের নতুন নতুন যেসব থানা হচ্ছে সেগুলোর ম্যাক্সিমামই (বেশিরভাগই) ভাড়া বাড়িতে। ভাড়া বাড়িতে থাকার কারণে আমাদের পুলিশ ফোর্স নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। সেজন্য এগুলো পারমানেন্ট (স্থায়ী) অবস্থায় নেওয়ার জন্য আমরা ডিসির কাছে নিয়ম অনুযায়ী বলেছিলাম, কলাবাগান থানার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা যায় কি না। ডিসি দেখে শুনে এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এই জায়গাটি আমাদের বরাদ্দ দেন। এবং সেই জায়গাটির মূল্য হিসেবে যে টাকা এসেছিল আমাদের মেট্রোপলিটন পুলিশ টাকা জমা দেওয়ার পর ডিসি এই জায়গাটি আমাদের হস্তান্তর করে দেন। এটিই হচ্ছে মূল কথা।
তিনি বলেন, যেহেতু লোকালয়ের পাশে খালি জায়গা সেহেতু অনেকে বা বাচ্চারা খেলাধুলা করত। কিংবা একটু আলাপচারিতার জন্য এই জায়গাটি ছিল। এখন সবাই এই জায়গাটি নিয়ে নানাভাবে কথাবার্তা বলছে।
মাঠ রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পরিবেশবাদীরা তো কিছুক্ষণ আগে আপনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, যেহেতু এটি এখন পুলিশের সম্পত্তি, কিছুক্ষণ আগে যারা আমাদের কাছে এসেছিলেন তারা একটা আবেদন করেছেন। বিকল্প কিছু করা যায় কি না, সে পর্যন্ত একটু স্থগিত রাখার জন্য। আমি বলেছি, আপনারাও একটু খোঁজাখুঁজি করেন। যাতে এই সুযোগটা থেকে ওই এলাকার মানুষ বঞ্চিত না হয়। আপনারা যদি একটা সুইটেবল জায়গা পান তাহলে…।
তিনি বলেন, থানা অবশ্যই জরুরি দরকার। এই বাচ্চাদের, যারা কথা বলছেন, তাদেরও একটা রিক্রিয়েশনের দরকার আছে। আপাতত কনস্ট্রাকশনটা না করে আমরা একটু খুঁজে দেখি। সেটাই বলেছেন।
আমি তাদের বলেছি, আমরা তো এখনই কনস্ট্রাকশনে যাচ্ছি না। খুঁজেন আমরা দেখব। আপনার যদি এর চেয়ে ভালো কোনো অফার দিতে পারেন অবশ্যই আমরা দেখব।
প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলে আসছেন খেলার মাঠ, নদী, নালা, খাল, জলাশয় সুরক্ষা দিয়ে উন্নয়ন করার জন্য। এ বিষয়টিকে আপনারা কিভাবে দেখছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা কিন্তু মাঠ যে বলেন…এটা বড়জোর ২০ কাঠা জমি হতে পারে। খুব বড় জমিও এটা নয়। খেলার মাঠ সেরকম কিছু নয়। টেনিস খেলার মাঠ হবে দুটা সেরকমও কিছু নয়। এটা খুবই ছোট একটা জয়গা। জায়গাটি একেবারে লম্বালম্বি একটা জয়গা। খুব সুন্দর বা ভালো একটা জায়গা তাও কিন্তু নয়। কাজেই সবকিছু এখন…যেহেতু তারা একটা আবেদন করে গেছেন আমরা অবশ্যই দেখব। সুইটেবল জায়গা যদি পাই…।
যেহেতু আমরা টাকা দিয়ে ফেলছি সেটার কি হবে সবকিছুই আমরা আলোচনা করব। এখন থানা ভবন নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে, যোগ করেন তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন এটা পুলিশের প্রপার্টি। যেহেতু একটা আবেদন এসেছে সেজন্যই আমি সেটাই বলছি, সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা চিন্তাভাবনা করব যে সেটা কি করা যায়।
তাহলে প্রাচীর নির্মাণ বন্ধের বিষয়ে আপনি ডিএমপি কমিশনারকে বলবেন কি না- এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করব।
এনএইচবি/এমএমএ/আরএ/