তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে: রিজওয়ানা হাসান

তেঁতুলতলা খেলার মাঠকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, 'তেঁতুলতলা খেলার মাঠকে নিয়ে গতকাল সৃষ্ট ঘটনা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি ও সংবিধান পরিপন্থী কাজ। যে মাঠে ঈদ গা, শিশুদের খেলাধুলা, মৃত ব্যক্তিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে, সেখানে কীভাবে একটি থানা বানানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে তা ভাবতেই অবাক লাগে। তার মানে এই নয়, আমরা কখনও বলছি না যে থানা বানানোর প্রয়োজন নেই। ধানমন্ডি কলাবাগান এলাকায় অনেক পরিত্যাক্ত ভবন রয়েছে সেখানে থানা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। রাজধানী ঢাকা এত ঘনবসতি ও জনবহুল, সেখানে আরও একটি খেলার মাঠ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আত্মহত্যার শামিল।'
সোমবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
'এলাকাবাসী খেলবে কোথায়? জবাবটা কী সরকারের কোনো কর্মকর্তা আমাদের দেবে? বাচ্চারা কম্পিউটার চালাবে, কম্পিউটার থেকে খেলে খেলে কিছু ক্রাইম শিখবে, আর হয়তো সেই কারণেই সরকার এখানে থানা বানানোর প্রয়োজন মনে করল। অথচ প্রয়োজনে একটি সুউচ্চ ভবনে কয়েকটি থানা ভবন ভাগ করে নিতে পারে'।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা গতকাল আমরা আবারও দেখলাম। যদি পুলিশ মনে করে তাহলে মামলা দেওয়া যেত, আইনি প্রক্রিয়ায় হয়তো তিনি গ্রেপ্তার হতে পারতেন আবার জামিন পেতে পারেন। রোজার দিনে মা ও ছেলেকে আটকে রাখা হলো, আমরা সারাদিন ধরে চেষ্টা করেছি অভিযোগটা কী তা জানতে। কিন্তু থানায় দায়িত্বরত কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি যারা আমাদের বিষয়টি অবহিত করবেন। বরং তারা আমাদের থানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে। তাহলে কী পুলিশ যা করতে চাইবে তাই সরকারি কাজ?'
'তাহলে সরকারি কাজ কী খেলার মাঠে থানা বানানো? বিনা অভিযোগে একজন মহিলাকে এবং আইনানুগ প্রক্রিয়া ছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়া কি সরকারি কাজ? আমরাতো এগুলোকে সরকারি কাজ মনে করি না, এই সরকার তো আমাদের সরকার। সরকারি কাজের নামে অন্যায় মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, খেলার মাঠ খেলার মাঠ থাকবে, এই অঙ্গীকার আমাদের দিতে হবে। এটা আমাদের অধিকার। অন্যতায় সরকারকে বলতে হবে অত্র এলাকার লোকজন কোথায় খেলাধুলা করবে? পরিবার সমাজের কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা যে বিব্রতকর ঘটনা ঘটাচ্ছে তার উত্তর চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নিজেদের গণতান্ত্রিক দেশ বলে অভিহিত করি আর খেলার মাঠের জন্য আন্দোলন করা যাবে না এটা কোন গণতন্ত্র? তাহলে কোন কোন বিষয়ে আন্দোলন করা যাবে আর কোন কোন বিষয়ে করা যাবে না, তার একটা তালিকা দেওয়া হোক। বলে দেওয়া হোক এগুলো সরকারি কাজ, এগুলোতে বাঁধা দেওয়া যাবে না। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে দেখতে চাই তাদের দ্বারা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে দেখতে চাই না।'
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে এএল আরডি, বাপা, বেলা, আসক, ব্লাস্ট, নিজেরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, নারীপক্ষ, গ্রীন ভয়েজ হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি ও টিআইবি। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিটি সংগঠন থেকে প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
টিটি/
