বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীতে চলছে ঈদের কেনাকাটা
ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়ছে। শুক্রবার ছুটির দিনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষ ছুটছে মার্কেটগুলোতে।
বিক্রেতারা বলছেন, আজই একরকম শেষ শুক্রবার ঈদের আগে। যদিও আরেকটা শুক্রবার আছে। কিন্তু মানুষ আজই কেনাকাটা শেষ করতে চাইবে। কারণ এরপর মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করবে।
তবে কেনাকাটায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টি। জুম্মার নামাজের পর থেকেই চলছে বৃষ্টি। অনেককে দেখা গেছে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মার্কেটে আসছেন। কারণ আজ ছুটির দিনে কেনাকাটা শেষ করতে না পারলে পরে শিডিউল মেলাতে পারবেন না।
রাজধানীর অভিজাত মার্কেট যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়ে দেখা যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। মূলত জুম্মার নামাজের পরে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে যমুনা ফিউচার পার্কে।
দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পোশাকের দামে ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। পাঞ্জাবি, সালোয়ার কামিজ ও বাচ্চাদের হরেক রকমের ডিজাইনের কালেকশন থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানগুলোতে।
তবে ক্রেতারা বলছেন, পোশাকের দাম খুব বেশি। পছন্দের পোশাক সাধ্যের মধ্যে থাকছে না বলে জানান তারা।
বেলা তিনটার কিছু পরে বসুন্ধরাতে গিয়ে দেখা যায়, মানুষ আর মানুষ। তবে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মানুষ এসেছে কেনাকাটা করতে। অনেকে এসেছেন বৃষ্টি শুরুর আগেই।
দোকানিরা বলছেন, আজ রোজার তৃতীয় শুক্রবার। ঈদের আগে আর একটি শুক্রবার আছে। সাধারণত শুক্রবারগুলোতে ভিড় অন্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ক্রেতাদের অনেককেই দেখা গেল আগেই জামা জুতা কিনে ফেলেছেন। আজ এসেছেন কসমেটিকস ও অন্যান্য টুকিটাকি কিনতে।
এমনই একজন শাহানা খানম। গ্রিনরোডের বাসিন্দা শাহানা বললেন, চাকরি করি। তাই শুক্রবার করে শপিং করতে হয়। গত শুক্রবারেই পরিবারের প্রায় সবকিছু কেনা শেষ করেছি। আজ এসেছি কসমেটিকস ও অর্নামেন্ট কিনতে।
নয়াপল্টনে নতুন মার্কেট হয়েছে 'পল্টন চায়না টাউন'। সেখানে কথা হয় বিক্রেতা আসলামের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গত কয়েকদিন থেকেই ভিড় বেড়েছে। আজ ভিড় বেশি হাওয়ার কারণ শুক্রবার। মাঝরাত পর্যন্ত ভিড় থাকে বলে জানান তিনি।
নয়াপল্টনেই পল্টন চায়না টাউনের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত গাজী ভবনেও দেখা গেল রমরমা অবস্থা। নামাজের পর মানুষের যেন ঢল নেমেছে। তবে এখানেও বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি।
রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত মৌচাক মার্কেটে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। এই মার্কেটটিতে সারা বছরই ভিড় থাকে। কিন্তু আজ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সবাই।
এমনিতেই এই মার্কেটটিতে সাধারণত মধ্য ও নিম্ন মধ্য আয়ের মানুষ কেনাকাটা করে। তাছাড়া মালিবাগ, রামপুরা, খিলগাঁও ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ক্রেতা সমাগম বেশি হয়।
মৌচাক মার্কেটের বিপরীতে ফরচুন শপিং মলেও দেখা গেল শুধু মানুষ আর মানুষ। এই প্রতিবেদক যখন ফরচুন শপিং মলে তখন বাজে বিকেল ৪টা ১০। অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে।
যারা রাস্তায় ছিলেন তাদের দেখা গেল বৃষ্টি উপেক্ষা করেই আসছেন। রিকশায় করে এসেছেন তাই দেখা গেল অনেকে ভিজে গেছেন।
ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী দ্বন্দ্বে তিন দিন বন্ধ থাকা নিউমার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। ছুটির দিন হওয়ায় মার্কেটগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে। তবে বৃষ্টি এখানেও বাগড়া দিয়েছে।
বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেচাকেনা চলছে। ক্রেতারাও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন মার্কেটসহ ফুটপাতগুলো থেকে। নিউমার্কেট ফুটওভার ব্রিজের নিচে শার্ট বিক্রেতা শাকিল মিয়া বলেন, কাল দোকান খুলেছি। কাস্টমারও আসছে অনেক। আর কোনো সমস্যা না হলে বেচাকেনা বাড়বে।
মহাখালী থেকে শপিং করতে আসা রনি বলেন, সংঘর্ষের কারণে তিন দিন ধরে এখানে আসতে পারিনি। কাল শুনলাম ঝামেলা শেষ হয়েছে তাই ঈদের কেনাকাটা করতে আসলাম। কাপড় ও জুতা কিনেছি। আরও কিছু কেনাকাটা করে বাসায় চলে যাব।
শ্যামলী থেকে আসা আলামিন বলেন, নিজের কিছু কাজ ছিল। সেটা সেরে শপিংয়ে ঢুকলাম। চশমা কিনব ও প্যান্ট কিনব।
এদিকে বুধবার (২১ এপ্রিল) ভোরে দোকান খোলার ঘোষণার পর প্রায় সব দোকানই খুলেছে দোকান মালিকরা। দেখা গেছে নিউমার্কেটের বিভিন্ন এলাকায় ক্রেতাদের অতিরিক্ত ভিড়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নিউমার্কেট এলাকায় যান চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে।
আরইউ/আরএ/