ঢামেক হাসপাতাল থেকে ৫ ‘দালাল’ আটক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে দালালির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে তাদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, পারুল আক্তার, জবুর বেগম, নিলু বেগম, আসমা খাতুন ও রোজিনা বেগম।
রোগীদের হয়রানি করা, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া এমনকি রোগীদের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে দিকে তাদের আটক করেন হাসপাতালের পরিচালক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাটুন কমান্ডার মো. শাহ আলম বলেন, ‘হাসপাতালের পরিচালক বহির্বিভাগ থেকে তাদের হাতেনাতে আটক করেছেন। এ সময় তারা বিভিন্ন রোগীকে ফুঁসলিয়ে বাইরে ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মচারীদের সহযোগিতায় এসব দালাল বছরের পর বছর রোগীদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। এ হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের দালাল রয়েছে। দালালদের অত্যাচারে রোগী ও রোগীদের আত্নীয়- স্বজনরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশারের কক্ষের সামনে এবং বহির্বিভাগ এলাকায় দালালরা ঘোরাফেরা করতেন। কিন্তু বাশার তাদের কিছুই বলতেন না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বরং টাকার বিনিময়ে তাদের আশ্রয় দিতেন। এমনকি অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতি দালালের কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে নিতেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানান, বাশার খুব চালাক। বহির্বিভাগে তার ২০ থেকে ২৫ জন দালাল রয়েছে। তাদের সবার কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে নিতেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। দালালেরা প্রায় ৩০ বছর ধরে এখানে আছে। এরা কেউ কেউ স্টাফদের খালা, ফুফু, বোন। আমি দুই বছর হলো বহির্বিভাগে এসেছি। এর আগে অনেকবার তাদের পুলিশে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আটক নিলু বেগম জানান, আমরা তো দুই একটা রোগী বাইরে চাঁনখারপুল জেনারেল হাসপাতাল, এলিফ্যান্ট রোড জেনারেল হাসপাতাল, চৌধুরী ক্লিনিক, মেডিকম ক্লিনিকসহ ঢামেকের আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালের বড় দালাল হচ্ছে, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা। তারা নিজের দেওয়া ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিকে রোগীকে সুকৌশলে পাঠিয়ে দেন। একই মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন রোগীদের কাছ থেকে। তারা আবার নিজেরাই দালাল হিসেবে লোক ঠিক করে রেখেছে তাদের মাধ্যমে রোগীকে পাঠান। কী কাগজে কলমে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন রোগীদের কাছ থেকে। আমরা দুয়েকটা কাজ করলে দোষ হয়। আর তারা হাসপাতাল থেকে পুকুর চুরি করছে তাতে কোনো মাথা ব্যথা নেই হাসপাতালের পরিচালকের।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘রোগীদের হয়রানি করার সময় বহির্বিভাগ থেকে আটক করে ওই পাঁচ মহিলা দালালকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে চাই।
ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশারের বিষয়ে পরিচালক বলেন, ‘তার বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্হা নেওয়া হবে।’
এসএন
