ব্যাপক ক্ষতি ব্যবসায়ীদের, আগেই কেন সংঘর্ষ থামানো গেল না?

সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষের সূত্রপাত। মঙ্গলবারও দিনভর সংঘর্ষ চলেছে। এ দীর্ঘ সময়ে সংঘর্ষ থামানো যায়নি। ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থী উভয়পক্ষই বলছে, সংঘর্ষ আরও আগে থামানো যেত। ক্ষয়ক্ষতিও এড়ানো যেত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসন যথাযথ উদ্যেগ নিলে সংঘর্ষ দ্বিতীয় দিনে গড়াত না। সেক্ষেত্রে এই ঈদের সময় ব্যবসায়ীরা এত বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতেন না। সাধারণ মানুষকেও রোজা রেখে এই ভোগান্তি মোকাবিলা করতে হতো না।
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, তিনদিন আগে থেকে সবে ঈদের মার্কেট জমতে শুরু করেছে। প্রতিদিনই ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। অথচ এই সময় মার্কেট বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে।
নিউমার্কেটের আশপাশে চন্দ্রিমা মার্কেট, নূরজাহান, গাউছিয়া ও চাঁদনী চক শপিং সেন্টার, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটসহ প্রায় ৩০/৩৫টি মার্কেট রয়েছে। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আসলে কল্পনার বাইরে চলে গেছে।
সংঘর্ষ থামানো যেত আগেই
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রশাসন তৎপর হলে সংঘর্ষ প্রথম দিনেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এখানে প্রশাসনের তৎপরতার যথেষ্ট ঘাটতি ছিলে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকরাও একই প্রশ্ন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে। সোমবার মধ্যরাত থেকে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘাতের সূত্রপাত, এত দীর্ঘ সময় পরও কেন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি শান্ত হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। তারা বলছেন, রাতের সংঘর্ষের সময় পুলিশ দ্রুত তৎপর হলেও সকালে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশকে ততটা উদ্যোগী দেখা যায়নি।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি অনেক জটিল আকার ধারণ করেছে। সংগত কারণেই পুলিশ ছাত্রদের প্রতি সফট আচরণ করেছে। গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মঙ্গলবার বিকালে হল ত্যাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ছাত্রদের। অথচ এই নির্দেশনা গতকালই দিলে সকালের মধ্যে হল খালি করা যেত। তাহলে পরিস্থিতি এত খারাপ হতো না।
সংঘর্ষ থামাতে তৎপর ছিল না ছাত্রলীগ নেতৃত্বও
ব্যবসায়ীরা যেমন অভিযোগ করেছেন পুলিশ নিস্ক্রিয় ছিল তাই সংঘর্ষ এত দীর্ঘ হলো তেমনি ছাত্ররাও একইভাবে মনে করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃত্ব নিস্ক্রিয় না থাকলে হয়তো সংঘর্ষ প্রথম দিনেই শেষ হতো।
সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পদক লেখক ভট্টাচার্য যান ঢাকা কলেজে। তখন বাজে দুপুর দেড়টা।
কলেজের ভেতরে পুকুরপাড়ে তাকে বহনকারী মাইক্রোবাস থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই ঘিরে ধরেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। সাধারণ সম্পাদকের সামনেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
কর্মীর লেখক ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা কেন এসেছেন এখানে? তামাশা দেখতে এসেছেন? রাত থেকে ঝামেলা চলছে। আপনারা কেউ আসলেন না।
আরইউ/এমএমএ/
