অভিমানী মেয়েকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে এই প্রথম এসেছে ঢাকা শহরে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সি সানজিদা আক্তার রিমি পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। অচেনা এই শহরে ভীত সন্ত্রস্ত হয় সে। এমন সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসা ছোট্ট মেয়েকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তার বাবা-মা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) ট্রাফিক-মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশফাক আহমেদ ঢাকাপ্রকাশকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মেয়েটি অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে। আমাদের পুলিশ তাকে বুঝিয়ে তার বাবা মায়ের কাছে হস্তান্তর করে।
সহকারী পুলিশ কমিশনার আশফাক আহমেদ বলেন, গতকাল রবিবার সকাল ১০টার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার সামনে মেয়েটিকে এলোমেলোভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত লোকজন মেয়েটিকে বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় একজন পথচারী দায়িত্বরত সার্জেন্ট মো. ইকরামুল আলমকে জানায়। পরে তিনি মেয়েটিকে মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর তার কাছ থেকে ঘটনা জানার চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, তার নাম সানজিদা আক্তার রিমি। বয়স ১৩ বছর। সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার বাড়ি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানায়। শনিবার রাতে বিভিন্ন কারণে বাবা-মার সঙ্গে সে অভিমান করে ঘর থেকে বের হয়ে আসে। পরের দিন ভোরে একা একা চন্দ্রা মোড় থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালের বাসে করে ঢাকা শহরে আসে। মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় নেমে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে মেয়েটি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তার কাছ থেকে বাবার মোবাইল নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা হয়। মেয়ের খোঁজ পেয়ে তারা তড়িঘড়ি করে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। তার বাবা-মা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আসার আগ পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন উৎসাহমূলক এবং মোটিভেশনাল কথাবার্তা বলা হয়, যাতে সে স্বাভাবিক হতে পারে এবং খুশিমনে বাবা-মার সঙ্গে ফিরে যেতে পারে। তার বাবা-মা ঢাকায় পৌঁছানোর পর মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে আসেন এবং তাদের মেয়েকে সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি আরও বলেন, বাবা-মা এবং সন্তানের মধ্যে যেন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে এবং এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে তাদের কাউন্সিলিং করা হয়।
কেএম/আরএ/
