সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা না নেওয়ার পেছনে প্রভাবশালীরা: এইচআরএফবি
নারী পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবাকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনার ১২ দিন পরও অভিযোগ গ্রহণ না করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। মামলা না নেওয়ার পেছনে প্রভাবশালীদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে এই ফোরামের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) এইচআরএফবির সমন্বয়ক তামান্না হক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। একজন পুলিশ হয়েও মহুয়া হাজং এতবার প্রচেষ্টা চালানোর পরও মামলা করতে না পারা থেকে প্রতীয়মান হয়, এ ক্ষেত্রে কোনো প্রভাবশালী পক্ষ ভূমিকা রাখছে।
গণমাধ্যমসূত্রের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে মানবাধিকার ও নাগরিক সংগঠনগুলোর এই জোট বলেছে, তিন দফায় নারী সার্জেন্ট মহুয়া হাজং মামলা করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তার মামলা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন এক বিচারপতির ছেলে সাইফ হাসান। পরে পথচারীরা গাড়ির চালক ও গাড়িটিকে আটক করে পুলিশে দেয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বিচারপতির ছেলে ও তার বন্ধুদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর আহত মনোরঞ্জনকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার কোমরের নিচের অংশ থেঁতলে যাওয়ায় একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
দ্রুততার সঙ্গে মামলা গ্রহণ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠনগুলোর এই জোটের পক্ষ থেকে। দাবিগুলো হলো ভুক্তভোগী ও তার পরিবার যাতে বিচার লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুততার সঙ্গে মামলা গ্রহণ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা; সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও মামলা গ্রহণ না করার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা; নারী সার্জেন্ট ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ; নারী সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের পেশাগত জীবনে যেন কোনো প্রকার নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করা এবং আহত মনোরঞ্জন হাজংয়ের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
এরআগে, গত ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজং। দুই দফা অস্ত্রপচারে তার ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় তিনি এখন বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি। মনোরঞ্জনের একমাত্র মেয়ে মহুয়া হাজং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সার্জেন্ট পদে কর্মরত। তার অভিযোগ, তার বাবা মনোরঞ্জন হাজংকে ধাক্কা দেওয়া লাল রঙের বিএমডব্লিউ গাড়িটির চালকের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু থানা তা নেয়নি।
এনএইচ/এএস