যানজট-শব্দদূষণে অতিষ্ঠ ঢাকাবাসী

রাজধানীতে বেড়েই চলেছে শব্দদূষণ আর যানজট। এতে অতিষ্ঠ ঢাকাবাসী। প্রতিদিনই যানজটের যন্ত্রণায় ভুগছেন নগরবাসী। সব মিলিয়ে প্রতিদিন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, একদিকে রমজান, গরম, অন্যদিকে রাস্তায় বের হলে শব্দদূষণ আর যানজটের শিকার হতে হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে, রাজধানীতে যানজট আর শব্দদূষণের পরিমাণ ততই বাড়ছে।
ট্রাফিক পুলিশ বলছে, যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি কিন্তু রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও মেট্রো রেলের কাজ চলমান থাকার কারণে রাস্তায় অতিরিক্ত যানজট দেখা যাচ্ছে ।
সোমবার (১১ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর, গুলিস্থান, শাহবাগ, মৎস্য ভবন মোড়, হাইকোর্টের মোড়, মালিবাগ, শান্তিনগর, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা উত্তর, বাড্ডা, মহাখালী, সাতরাস্তা, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যানজটের এ চিত্র ছিল চোখে পড়ার মতো।
দেখা গেছে, রমজানের শুরু থেকেই রাজধানীতে ভয়ংকর যানজটের দৃশ্য। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও কোনোভাবে যানজট কমছে না। যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী।
প্রেসক্লাব মোড়ে কথা হয় মোহাম্মদ আতিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজধানীতে শব্দ দূষণ আর যানজটের কবলে পড়ে নাকাল অবস্থা আমাদের। এ দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই!
শাহবাগ মোড়ে কথা হয় সাভারের যাত্রী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তায় বাস চলছে সামান্য সময় কিন্তু একটি সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ৩০-৪০ মিনিট। আবার কোনো যায়গায় ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও গাড়ি চলছে না।
আশুলিয়ার যাত্রী মাহমুদুল হক বলেন, ঢাকাতে যানজটের কমার কোনো লক্ষণ নেই। আমার বয়স ৫০ বছর ২০ বছর ধরেই ঢাকাতে যানজট দেখছি। এক এক সরকার একরকম পরিকল্পনা নেয়, আর যানজট বেড়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে বসে থাকতে হয় আমাদের।
মিরপুরে যাত্রী রাজু বলেন, এদিকে রোজা অন্যদিকে গরম পুরা যানজটে অস্থির হয়ে গেছি। এজন্য মৎস্য ভবন থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত হেঁটে এসেছি, কারওয়ান বাজার গিয়ে গাড়িতে উঠব।
সংসদ ভবন এলাকায় চলাচল অনাবিল পরিবহনের চালক লাল মিয়া বলেন, রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার রাস্তায় বেশি, যার কারণে যানজট ও বেশি। তিনি বলেন, দিনের বেলায় যানজট তো আছেই ইফতারের সময় আরও ভয়াবহ অবস্থা হয়।
যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে এয়ারপোর্টে ডিউটিরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট অপু বলেন, রাস্তার লেন যদি সঠিক মত না চলে তাহলে যানজট বেশি দেখা দেয়। রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিন যানজট হচ্ছে এর কারণ হলো মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় রাস্তার ছোট হয়ে গেছে এবং প্রাইভেটকারের সংখ্যা বাড়ছে।
মিরপুর থেকে নিউমার্কেট আসা বাসের যাত্রী এম এ পাশা বলেন, দুইমাস ধরে যানজটের ভোগান্তিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রমজানে যানজট আরও বেড়ে গেছে। রাস্তায় অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। এ সমস্যা নিরসনের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এলিফ্যান্ট রোডে কথা হয় সুমন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে এখন শব্দ দূষণ আর যানজটে পরিণত হয়েছে। এ সমস্যার সমাধান হবে কবে?
আজিমপুর বাস স্ট্যান্ডের ডিউটিরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. রাজু আহমেদ বলেন, সকাল দশটার পর রাজধানীতে যানজট বেড়ে যায়। কারণ নিউমার্কেটে বেশি গাড়ির চাপ থাকে রাস্তার লেন সঠিক মতন চলে না, এজন্য বেশি যানজট তৈরি হয়। তবে যানজট নিরসনে আমরা সব সময় কাজ করছি।
শাহবাগে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো: হাসান ইমাম বলেন, শাহবাগে বেশি যানজট হওয়ার কারণ হল মেট্রোরেল, এর কারণে রাস্তাটি একেবারে ছোট হয়ে গেছে। এবং আশেপাশে অনেকগুলো মার্কেট রয়েছে ঈদকে সামনে রেখে এসব মার্কেট কেনাকাটা জমে উঠছে। যার কারণে এ এলাকায় সব সময় একটু যানজট থাকবে। তবে ইদানিং এ যানজটের ভয়াবহতা আরও বেড়েছে মনে হচ্ছে।
কেএম/আরএ/
