রাজধানীতে চাকা যেন ঘুরছেই না

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই যানজট লেগে থাকে। প্রায় দুই মাস ধরেই যানজটের যন্ত্রণায় ভুগছে রাজধানীবাসী। রাজধানীতে বসবাসরত মানুষের অভিযোগ, যানজটে ভুগলেও দেখার কেউ নেই।
চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বলছেন, একদিকে রমজান, গরম, অন্যদিকে ব্যাপক যানজট। সব মিলিয়ে নাকাল অবস্থা। দিন যত যাচ্ছে, যানজটের পরিমাণ ততই বাড়ছে।
এদিকে ট্রাফিক বলছে, যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি কিন্তু রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও মেট্রোরেলের কাজ চলার কারণে অতিরিক্ত যানজট তৈরি হচ্ছে।
রমজানের প্রথম দিনেই ভয়ংকর যানজটের দৃশ্য দেখেছে নগরবাসী। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও যানজটের কারণে অনেকেই রাস্তায় ইফতার করছেন।
আজ রবিবারও সকাল থেকেই যানজটের কবলে পড়েছেন রাজধানীবাসী। রাস্তায় গাড়ি চলছে ৪-৫ মিনিট এরপর যানজটের কারণে দাঁড়িয়ে থাকছে ৩০-৪০ মিনিট। আবার কোনো কোনো স্থানে ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও গাড়ি এগুচ্ছে না। দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে বসে থাকার পর এক সময় বিরক্ত হয়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন মানুষ। যার কারণে ফাঁকা থাকছে বাস।
রবিবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর, নীলক্ষেত, ধানমন্ডি, শাহবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, মালিবাগ, শান্তিনগর, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা ও উত্তর বাড্ডা, এয়ারপোর্ট, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ঘুরে যানজটের এ চিত্র চোখে পড়ে।
বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ভিআইপি ২৭ নম্বর বাসের চালক সুজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুমাস ধরে রাজধানীতে যানজট। রাস্তায় অতিরিক্ত মানুষ চলাচল করছে এবং অতিরিক্ত প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল থাকার কারণে বেশি যানজট হচ্ছে। তাছাড়া রাস্তার লেন খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। যার কারণে আরও বেশি যানজট হচ্ছে।
অনাবিল পরিবহনের চালক সাইফুল হোসেন বলেন, রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারেই রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে। আমরা বাস চালাব কোথায়? সারাদিন এভাবে যানজট লেগেই থাকে। আজ মনে হচ্ছে ভয়াবহ অবস্থা।
উইনার পরিবহনের চালক রবিন মোল্লা বলেন, প্রতিদিন তিন থেকে চারটা ট্রিপ দিতে পারি। আজ মাত্র একটা দিয়েছি। হয়ত আরও একটা ট্রিপ দিতে পারব। ঢাকার ভিতরে যদি এমন হয় তাহলে আমরা চলব কিভাবে। যানজটের সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।
বাস থেকে নেমে হেঁটে যাওয়া যাত্রী নজরুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, উন্নয়ন হচ্ছে সবজায়গায় কিন্তু সড়কে কোনো উন্নয়ন নেই। রাস্তাঘাট যানজটে লেগেই আছে। প্রায় দুই থেকে তিন মাস ধরে এই যানজটের সমস্যা ভোগ করছি আমরা, দেখার কেউ নেই।
যানজট নিয়ে বাড্ডা এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. কালাম বলেন, একদিকে মার্কেটমুখী হচ্ছে মানুষ অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে যার প্রভাব রাস্তার উপর পড়েছে। সকালে ও ইফতারের আগে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়। কারণ এই দুটি সময়ে একসঙ্গে অনেক মানুষ বের হয়। তবে সর্বাত্মক চেষ্টা করি যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
এলিফ্যান্ট রোডে ডিউটি ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মইনুল ইসলাম বলেন, এখন নিউমার্কেট এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় স্বাভাবিকভাবে যানজট থাকবে কারণ মানুষ ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছে। এই কারণে ঈদের কয়েকদিন হয়ত এলাকায় যানজট বেশি থাকবে। তিনি বলেন, আমরা চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।
মহাখালীতে ডিউটিরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. রাসেল বলেন, এ রাস্তায় এখন থেকে রাত পর্যন্ত একটু গাড়ির চাপ থাকে কারণ এটা মেইনরোড। তাছাড়া টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড এখানে, যার কারণে রাস্তার আশেপাশে অনেক বাস জমে থাকে, ফলে যানজট হয়।
কেএম/আরএ/
