পুলিশের ইউনিফর্ম পরে শিক্ষিকাকে ‘ইভটিজিং’

পুলিশের ইউনিফর্ম পরে রাজধানীর ফার্মগেটে কলেজের এক শিক্ষিকাকে ইভটিজিং ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। তবে সেই পুলিশ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ বলছে, ইভটিজিং করা ওই ব্যক্তি পুলিশ কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে, পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার নাম ড. লতা সমাদ্দার। তিনি তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মলয় বালা জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা মামলা দায়ের করব।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জানান, পুলিশ সদস্যের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ১৩৩৯৭০। মুখে দাঁড়ি আছে। শিক্ষিকার ধারণা, তিনি মাঝ বয়সী। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে তিনি তার কর্মস্থল তেজগাঁও কলেজে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক বাসা থেকে রিকশাযোগে ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে নামেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে (আনুমানিক সকাল ৮টা ২০ থেকে ৮টা ৩৫) তেজগাঁও কলেজের দিকে এগুতে থাকেন। তখন সেজান পয়েন্টের সামনে একজন পুলিশ (পোশাক পরিহিত, মোটরসাইকেল নম্বর ১৩৩৯৭০) স্টার্ট বন্ধ রাখা মোটরসাইকেলের উপর বসে ছিলেন। তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্য শিক্ষিকার কপালের টিপ নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ সময় তিনি পেছনে ফিরে গিয়ে তার আচরণের প্রতিবাদ করলে পুনরায় গালিগালাজ করেন। এরই একপর্যায়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে তিনি শিক্ষিকার গায়ের উপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। শিক্ষিকা সরে গিয়ে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বাইকের নিচে পড়ে গিয়ে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
ঘটনাটি ঘটার পর রাস্তার ঠিক বিপরীত পাশে কর্তব্যরত ৩ জন ট্রাফিক পুলিশের কাছে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। এই ৩ জনের একজনের নাম ‘অভিজিৎ’। তিনি শিক্ষিকাকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।
বিকালে ফার্মগেটে গিয়ে জানা যায়, কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য অভিজিৎ সকালে ডিউটি করে চলে গেছেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর শেরেবাংলা নগর থানা থেকে সকালে অভিযোগকারী শিক্ষিকাকে নিয়ে ফার্মগেটে যান শেরে বাংলানগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ওসি (অপারেশন) স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। গণমাধ্যমকে তিনি বিস্তারিত বলবেন না।
ওসি (অপারেশন) শাহজাহান মণ্ডলকে ফোন করা হলে তিনি জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ এখনো পাওয়া যায়নি। আশেপাশের দোকান সে সময় বন্ধ ছিল। তাই পুলিশ সদস্যকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, শিক্ষিকাকে লাঞ্চিতকারী পুলিশ কিনা সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি পুলিশের সদস্য।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া আশেপাশের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দেখে বিস্তারিত জানানো যাবে।
কেএম/আরএ/
