ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের পোস্টার সাঁটানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ছবি সংবলিত পোস্টার লাগিয়েছে ছাত্রদল। এর প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিজয় একাত্তর হলগেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন আবাসিক হলপাড়া ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা রাত ১টার পর হলে ফেরত যান।
এ সময় তারা ‘টু জিরো টু ফোর, ছাত্ররাজনীতি নো মোর’, ‘দেয়ালে পোস্টার লাগালে, দুঃখ আছে কপালে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’—ইত্যাদি স্লোগান দেন। স্লোগান ও মিছিল নিয়ে হল চত্বর হয়ে মলচত্বর, ভিসিচত্বর ও রাজু ভাস্কর-টিএসসি এলাকায়ও মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
তারা জানান, ছাত্রলীগ যে পদ্ধতিতে ক্যাম্পাস দখল করে রেখেছিল, পুরো ক্যাম্পাসকে পোস্টার দিয়ে ভরে রাখতো বিভিন্ন ইস্যুতে, ঠিক সে কায়দায় ছাত্রদলও করছে। বিজয় একাত্তর হলে গেটে এমনভাবে পোস্টার লাগানো হয়েছে, এটা হল নাকি পার্টি অফিস বোঝা যাচ্ছে না। আমরা এরকম দখলদারত্ব থেকে মুক্তি চাই।
আসিফ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। ছাত্রদল হলগুলোতে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। এখন পোস্টার লাগাচ্ছে, পরে হল, গণরুম-গেস্টরুম চালু করবে। আমরা এসব হতে দেবো না। আমরা ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ চাই।’
হল চত্বরে মিছিল-স্লোগান চলাকালে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক স ম আলী রেজা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘তোমাদের অবস্থা বুঝতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তোমরা (শিক্ষার্থীরা) স্মারকলিপি দাও। আমিও তোমাদের সঙ্গে যাবো।’
এদিকে, রাতে শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের দেয়ালে বা আশপাশে যেকোনও ধরনের পোস্টার লাগানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হল প্রশাসন। এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হলের সার্বিক সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য হলের অভ্যন্তরে বা গোলচত্বরের দেয়ালে হল প্রশাসনের অনুমতি ব্যতীত কোনও প্রকার ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার লাগানো ও দেয়াললিখন করা যাবে না। কেউ এই আদেশ অমান্য করলে হল কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।