শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করার আদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সাড়ে ১১টার দিকে মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের মূল ফটক আটকে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে বিভিন্ন ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা 'সে নো টু এলজিবিটিকিউ', 'উই ডোন্ট প্রমোট এলজিবিটিকিউ'।
আন্দোলন কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাসীর মামুন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে কর্মসূচি পালন করছি। তবে যারা শিক্ষার্থী, ক্লাস আছে তারা নির্বিঘ্নে প্রবেশ করতে পারছেন না। কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার গল্প ‘শরীফ থেকে শরীফা’ প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়ে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর থেকেই আলোচনা-সমালোচনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এরপরই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিষয়টিকে বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, আসিফ মাহতাব উৎস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সঙ্গে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে।
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেওয়ার সময় সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের দুটি পাতা ছিঁড়ে ফেলেন আসিফ মাহতাব।
বক্তব্যে তিনি বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাইয়ের অভিযোগ তোলেন। এ সময় সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি কিনতে বলেন। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দিতে বলেন।
ঘটনার পর রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাহতাব লিখেন, ‘আজকে আমি ব্র্যাকে রেগুলার ক্লাস নিয়েছি। আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস নিতে না যাই। আমি জানি না হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিল। আমাকে কোনো কারণ তারা দেয়নি।’