যবিপ্রবিতে ১৫ চাকরিপ্রার্থীকে মারধর, ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে অন্তত ১৫ চাকরিপ্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী প্রার্থী আরাফাত হোসেন বাদী হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও এজাহারে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। আসামিরা হলেন, যবিপ্রবির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী বেলাল হোসেন (২৪), রাফি হাসান (২৪), গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ান হাসান রাফি (২০), পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের রায়হান রাব্বি (২৪), সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সোয়েব (২৪), পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহিনুর (২৪)। অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রার্থীদের আটকে রাখার ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে। এখনও কেউ আটক হয়নি।
জানা যায়, সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই–বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্য আজ ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। সকাল ১০টা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে প্রার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত ১৫ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্র হলে নিয়ে আটকে রাখা হয়।
পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সংগ্রহ করতে গেলে সেটিও ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর সন্ধ্যায় আটকে রাখা প্রার্থীদের মধ্যে আরো পাঁচজনের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ৩৮ প্রার্থীর ২৬ জন শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।
বাদীর অভিযোগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট অপারেটর পদে চাকরি পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে গেলে শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলে বেলাল হোসেন, রাফি হাসান, রেদোয়ান হাসান রাফি, রায়হান রাব্বি, মোহাম্মদ সোয়েব (২৪), মো. শাহিনুর (২৪) ও অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জন সহযোগী চাকরিপ্রার্থীদের ধরে হলের ভেতরে নিয়ে আটকে রাখে। এ সময় হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, এসএস পাইপ, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে চোখ বেঁধে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে নিয়ে ছেড়ে দেয়।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘আমি বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। আমার কোনো লোকজন কাউকে আটকে রাখেনি। যেসব কক্ষের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমার প্রতিপক্ষের এক নেতার অনুসারীরা থাকে'।