হুইল চেয়ার ছাড়া জবির ছাত্রী হলে নেই কোনো মেডিকেল সুবিধা
একটিমাত্র আবাসিক হল দিয়েই অনাবাসিক তকমা ঘোচানো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নেই কোনো মেডিকেল সুবিধা।
একটি মাত্র হুইল চেয়ার ছাড়া হলটিতে মেডিকেল সরঞ্জাম বলার মতো কিছুই নেই। ফলে কোনো শিক্ষার্থী হঠাৎ করে অসুস্থ হলে নেই কোনো প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। তখন সকাল, দুপুর বা রাত হোক, তাকে অসুস্থ শরীর নিয়ে ছুটতে হচ্ছে সুমনা হাসপাতাল বা ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলসহ অন্যান্য হাসপাতালে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে উদ্বোধন করা হয় বহুল প্রতীক্ষিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। এরপর প্রায় আড়াই বছর পরেও হলটিতে কোনো মেডিকেল সেন্টার খোলা হয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হয়। কিন্তু দাপ্তরিক সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বন্ধ থাকে মেডিকেল সেন্টারও।
এ ছাড়া, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তাহে মাত্র চার দিন স্বশরীরে ক্লাস হয় এবং এই চার দিন স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার সুযোগ থাকে। এতে স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে শিক্ষার্থীদের হয়তো ঢাকা মেডিকেল, সুমনা হাসপাতাল অথবা ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে ছুটতে হচ্ছে।
সম্প্রতি মৌসুম পরিবর্তনের ফলে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে যখন তখন হাসপাতালে ছুটছে অসুস্থ ছাত্রীরা। এমন সময় হলে হাউজ টিউটর বা প্রভোস্ট কাউকেই পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের হলে কি সুবিধা আছে কোনো? শুধু থাকা যায় আর খাবারের কথা নাইবা বললাম। অসুস্থ হলে যে প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধা দেবে সেটারও কোনো ব্যবস্থা নেই।
হলে আবাসিক তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, থাকার মতো থাকা আর খাওয়ার জন্য একটা অপরিচ্ছন্ন ক্যান্টিন ছাড়া কিছুই নাই এই হলে। গ্যাসের লাইন নাই, পানির ফিল্টার নস্ট। আমরা এত এত ছাত্রী হঠাৎ কোনো সমস্যা হলে কোথায় যাব আমরা, এটা তো উনাদের বোঝা উচিত।
আর যাই হোক, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তো থাকবে। কিন্তু এই হলে আমরা কোনো সুবিধাই পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষের আছে অনুরোধ করব যত দ্রুত সম্ভব আমাদের জন্য যেন একটি মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যোগ করেন তিনি।
তবে শিক্ষার্থীদের জানায়। প্রশাসন চাইলে জবির মেডিকেল সেন্টারকে উন্নত করে, সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগাতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার বলেন, ভিসি স্যারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা ঈদের পরেই একটা রুম নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনে দেব। আর হলে মেডিকেল সেন্টারের বিষয়ে আমি ভিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলব।
এমএমএ/