উৎসবমুখর পরিবেশে রাবিতে সরস্বতি পূজা

উৎসবমুখর পরিবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে এই পূজা এবং মন্দির প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভার অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় রাবি কেন্দ্রীয় মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বৈদিক যুগের হাত ধরে আমাদের যে সনাতন ধর্মের প্রবর্তন হয়েছে, সেখানে অনেক দেবদেবীর আরাধনা এবং পূজার চর্চা হয়ে থাকে। সেখানে সরস্বতীকে আমরা জ্ঞানের দেবী বলি। এই জ্ঞান কিন্তু আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বর্তমান সময়ে আমরা কিছুটা ধর্মের ভেদাভেদ দেখি তবে আমাদের ছোটবেলায় কখনই এমনটা ছিল না। আমরা সবাই পূজো মন্ডপে যেতাম এবং মুখিয়ে থাকতাম যে কখন প্রসাদ দেওয়া হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, এই পূজোর মাধ্যমে ভালোবাসা জাগরিত হোক। আমি আশা করছি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরস্বতীর অন্তর্নিহিত বিষয়টি বুকে ধারণ করবে এবং আগামীতে সকল বিভাগ একত্রিত হয়ে এই কেন্দ্রীয় মন্দির প্রাঙ্গণে সম্মিলিতভাবে সরস্বতী পূজা উদযাপন করবে। এসময় উপাচার্য রাবিতে সামনে থেকে সম্মিলিত সরস্বতী পূজা উদযাপণে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।
উপ-উপাচর্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এই পূজা অনুষ্ঠানে এসে আমার এমনটিই মনে হচ্ছে। কারণ এই পূজার অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকল ধর্মের মানুষেরা আমরা একত্রিত হয়েছি। যারা পূজা করছে এবং যারা পূজা করছিনা তারা আমরা সবার শুভাকাঙ্খী। সবার জীবনে উন্নতি ঘটুক, সবাই বিদ্যায় অনুরাগী হোক, সবাই মানবিক এবং অসাম্প্রদায়িক হোক আজকের দিনে এই কামনা করছি।
সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, আমাদের মানবিক ধর্ম পালন করলে সব হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতার পর সংবিধানে চার স্তম্ভের কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা একটি। ৭১এর যুদ্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে যুদ্ধ করেছি। আজকে সরস্বতী পূজার মাধ্যমে সবাই ধর্মনিরপেক্ষতার শিক্ষা নিয়ে যাক এই আমার প্রার্থনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী দীপু রায়ের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী। এসময় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ড. সুজন সেন, রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বোরাক আলীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পূজা উদযাপন না করে এবারে প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় মন্দির প্রাঙ্গণে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, গনিত বিভাগ, ফলিত গনিত বিভাগ, ম্যাটেরিয়ালস্ সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, চারুকলা অনুষদ, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগ পূজা উদযাপন করে।
এএজেড
