‘শহিদ মুখতার ইলাহী’র প্রতি গভীর ভালোবাসা জানালো বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিনিধি।
শহিদ খোন্দকার মুখতার ইলাহী জম্মেছেন ২৬ মার্চ, ১৯৪৯। তিনি আত্মদান করেছেন মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার মাত্র কদিন আগে। তিনি ছিলেন কারমাইকেল কলেজের ১৯৭০-’৭১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সংসদ ভিপি ও অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র, ইংরেজিতে পড়তেন। তার প্রচেষ্টায় উত্তারাঞ্চলের আপামর জনসাধারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা মুখতার রংপুর জেলার মুজিব বাহিনীর অন্যতম কামান্ডার ছিলেন। পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধে নেতৃত্বদান করেছেন তিনি। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষের জীবনের শেষ নি:শ্বাসের সেই রক্তঝরা দিনটি হলো ৯ নভেম্বর, ১৯৭১। মাত্র ২১ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজের জীবনকে সাহস সাহসে দান করে অমর হয়েছেন তিনি। চলে গিয়েছেন আইরখামার দিবসে।
সেই জায়গাটি হলো লালমনিরহাট জেলায় আইরখামার। সেখানে গণহত্যা হয়েছে। দিনটি ‘আইরখামার গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহিদ খোন্দকার মুখতার ইলাহীর নামে শেখ হাসিনার সরকার প্রতিষ্ঠিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে ‘শহীদ মুখতার ইলাহী হল’।
০৯ নভেম্বর, বুধবার ভোরে সকালেই শহীদ মুখতার ইলাহী হল’-এর ‘শহীদ খোন্দকার মুখতার ইলাহী’র প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাসিবুর রশীদ। হল প্রশাসন এবং সাধারণ হলবাসী ছাত্রদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় লালমনিরহাটের আইরখামারের গণকবরে মুখতার ইলাহীসহ সকল বীর শহীদ, সাধারণ মানুষ, নারী, শিশুদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন উপাচার্য। ‘শহীদ মুখতার ইলাহী হল’ পক্ষ থেকে সাধারণ ছাত্ররা তার স্মৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছেন। ছিলেন হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষকরা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও।
তারা সবাই আইরখামারের সকল আত্মদান করা মানুষের পূণ্যস্মৃতিতে ১ মিনিট নিরবতা পালন করেছেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববদ্যালয়ের পক্ষে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে আমরা একটি নতুন স্বাধীন দেশ পেয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।’
এ সময় শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট ড. মোঃ রশীদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুমসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ড. কে. মুশতাক ইলাহী, শিক্ষাবিদ ড. খন্দকার মওদুদ ইলাহী, বেরোবির প্রক্টর গোলাম রব্বানী, বহিরাঙ্গন কার্যক্রম দপ্তর পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লোক প্রশাসনের বিভাগীয় প্রধান আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জমশেদ আলম হিরু, বেরোবিসাসের সাধারণ সম্পাদক ইভান চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।
ওএফএস।