ঢাবির বটগাছ যেভাবে ‘কেনেডির বটগাছ’ হয়ে উঠল
মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সরকার যখন পাকিস্তানি শাসকদের পক্ষ নিয়ে রাজনৈতিক ও অস্ত্র সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছিল, তখন এর বিপক্ষে জনমত গড়ে তুলেছিলেন প্রয়াত যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি।
যুদ্ধকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) আসার অনুমতি পাননি। অনুমতি না পেলেও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনমত গঠন করেছিলেন কেনেডি।
গণহত্যার বিরুদ্ধে নিজের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে অনেক মানুষ মুক্তিকামী বাঙালির পক্ষে অবস্থান নিতে থাকেন। একপর্যায়ে পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের প্রস্তাবও উঠেছিল মার্কিন কংগ্রেসে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের তিন মাসের মধ্যে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসেন টেড কেনেডি। ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) আয়োজনে শিক্ষার্থী ও জনতা এক সমাবেশে অংশ নেন তৎকালীন মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম. কেনেডি।
এ সময় সিনেটর টেড কেনেডি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে কিছু সরকার আপনাদেরকে এখনো চিনতে পারেনি, তবে বিশ্বের মানুষ আপনাদেরকে চিনেছে এবং অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য আপনারা এখানে যা করেছেন তা বিশ্ববাসী স্বীকার করে।’
পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলা থেকে ’বটবৃক্ষ’ হানাদার যেইস্থান থেকে বটবৃক্ষ উপড়ে ফেলে সেখানেই আরেকটি বটবৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়। আজকের যে দরিদ্র আকৃতির বটগাছটি দেখা যায়, সেটির চারা রোপণ করা হয় বাহাত্তরের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ; যা আজ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
দীর্ঘ ৫০ বছর পর সোমবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে পিতার লাগানো ‘বট বৃক্ষ’ পরিদর্শন করলেন এডওয়ার্ড এম কেনেডির পুত্র এডওয়ার্ড এম কেনেডি, জুনিয়র। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ড. ক্যাথেরিন ‘কিকি’ কেনেডির (স্ত্রী), টেডি কেনেডি (ছেলে), গ্রেস কেনেডি অ্যালেন (ভাতিজি) ও ম্যাক্স অ্যালেন (ভাতিজা)।
এমএমএ/