ছাদ থেকে পড়ে মারা গেলেন রাবি’র ছাত্র শাহরিয়ার হাসান

১৯ অক্টোবর, বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে ৮নং ওয়ার্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এ দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। সুষ্ঠু তদন্তের দাবি শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের ছাত্র এম. হাসান হিমেল বলেন, ‘শাহরিয়ার যখন পড়েছিল তখন জোরে শব্দ হয়েছিল। পাশেই আমার রুম ছিল। জানালা দিয়ে দেখেছি, পা উপুড় ছিল, প্রথমে মাথাটাই নিচে লাগতে দেখি। চারতলায় কিছু ছেলে ছিল। তারা পড়ে গেছে বলে চিৎকার করছিল। তার কাছে কোনো মোবাইল ছিল না, ঘটনাস্থলেও পাওয়া যায়ন। মুখের সামনের পাটির দাত, নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। পিছনের পাটি থেকে তেমন রক্ত পড়েনি। কীভাবে পড়েছে বা পড়তে পারে মডিক্যাল রিপোর্ট ছাড়া সঠিক বলা যাচ্ছে না। সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
এই বিষয়ে শাহরিয়ারের বন্ধু অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, ‘মৃত্যু মানুষের হাতে নয় কিন্তু সেটার কারণ জানাটা অতি জরুরি। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হঠাৎই আশ্চার্যজনকভাবে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক মৃত্যুর কাতারে পড়ে না। সে অসুস্থও ছিল না। আমাদের কাছে এটা আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না। কোন ষড়যন্ত্রের শিকার কিনা, তা সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-কেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজির অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। এই হলের প্রতিটি ফ্লোরে উঁচু রেলিং আছে। নরমালি পড়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি রেলিংয়ে পা তুলে বসে থাকে, তাহলেই অসাবধানতাবশত পড়তে পারে। যদি তা না হয় তবে পরিকল্পিত হত্যাও হতে পারে। এর তদন্ত হওয়াটা অতি জরুরি। তাহলেই আসল ঘটনা সবার সামনে আসবে। না হলে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, দুর্ঘটনা নাকি হত্যা?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু তার পাশে কেউ ছিল না, সেহেতু সে কীভাবে পড়ে গিয়েছে-এ জানা যায়নি। আমাদের কাছে এমন কোনো আলামত আসেনি যা দেখে আমরা বলব, এ পরিকল্পিত হত্যা। তবে তার আত্মীয়স্বজন বা সহপাঠীরা যদি তদন্তের জন্য দাবি জানায় তাহলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’
ওএফএস।
