সাড়ে ৪শ ছাত্র, ছাত্রীর জন্য ক্লাসরুম মাত্র দুইটি

শিক্ষার্থীদের তুলনায় খুব কম ইতিহাসের শ্রেণীকক্ষ। ফলে রুটিনমাফিক ক্লাস করাও হচ্ছে না অনেক ছাত্র, ছাত্রীর। নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে তাদের অনেককে। ফলে সেশনজটের মতো মহামারীর মধ্যে আটকে গিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগটি।
দীর্ঘদিন যাবৎ শ্রেণীকক্ষ সংকট সমাধান না করায় বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, বেলা সাড়ে তিনটায় উপাচার্য দপ্তরে তালা দিয়েছেন ইতিহাস বিভাগের ছাত্র, ছাত্রীরা।
এ সময় নবনিযুক্ত প্রক্টরসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
রাত আনুমানিক আটটার দিকে শিক্ষকেরা অবরুদ্ধমুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগে পাঁচটি ব্যাচের ৪৫০জন শিক্ষার্থীর জন্য রুম সংখ্যা মাত্র দুইটি। তাদের জন্য মোটেও পর্যাপ্ত নয়। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগ শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে প্রথম সারিতে রয়েছে কিন্তু সে তুলনায় তাদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ বরাদ্ধ করা হয়নি।
উপাচার্যের দপ্তরে তালা দেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘গত চার বছরেও আমাদের কোনো নির্দিষ্ট ক্লাসরুম দেওয়া হয়নি। সেই করোনার পর থেকে শুনি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিভাগগুলোকে নিদিষ্ট পরিমাণ ১২/১৬ স্পান রুমবণ্টন করে দেয়া হবে। তবে সমাধান আজও পেলাম না। গত চার বছরে আজ এখানে, কাল ওখানে এভাবে ক্লাস করে আসছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ক্লাসরুম সংকটের কারণে গত সেমিস্টারে দীর্ঘদিন ক্লাস করতে পারিনি। পরবর্তীতে প্রশাসনকে বলে গ্যারেজ থেকে নতুন একাডেমিক বিল্ডিংয়ের অষ্টমতলায় পুরোপুরি কাজ শেষ হতে না হতেই দুটি রুমে কাঠের বেঞ্চ তুলে সেমিস্টারটা শেষ করি। মাঝখানে কৃষি বিভাগের ভাইবন্ধুদের সাথে ঝামেলাও হয়। এর আগে নতুন একাডেমিক ভবনের আটতলায় আমরা ক্লাস করেছিলাম। সেই ক্লাসরুমও ছেড়ে দিতে বলা হয়। জানানো হয়েছে, পাঁচতলায় ক্লাসরুম দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো আমাদের যথেষ্ট ক্লাসরুম নেই। এ কারণেই আমরা এই কর্মসূচি পালন করছি।’
ইতিহাস বিভাগের সভাপতি সানজিদা পারভীন বলেছেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকে ইতিহাস বিভাগের তিনটি রুমে পাঠদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছি। প্রতিবছর শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার কারণে শ্রেনীকক্ষের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। ফলে আমাদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। আমাদেরকে শ্রেণীকক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছেন। ইতিমধ্যে আমরা ২-৩ স্পানের রুম পেয়েছি। বিভাগের শ্রেণিকক্ষজনিত সমস্যা সমাধান হতে আরো দশ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আর ক্লাস বুঝে নেওয়া শিক্ষকের দায়িত্ব। আমরা শিক্ষকরা ক্লাস বুঝে নেব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন জানান, ‘সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।’
তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুবের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ওএফএস।
