কোনো সমাবর্তন হলো না বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করার পর ভালোভাবে সবার সঙ্গে বিদায়ের নাম ‘সমাবর্তন’। ২০১১ সালে বরিশাল বিদ্যাপীঠটি যাত্রা শুরু করেছে। দীর্ঘ এক দশকে ৬টি ব্যাচে স্নাতক শেষে করেছে। পাঁচ হাজার ৮শ ৮৫ জন জন (একাডেমিক শাখার তথ্য অনুযায়ী) ছাত্র ছাত্রী পাশ করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ করছে ৫টি ব্যাচ ৷ তবে এখনো তাদের কোনো সমাবর্তন হয়নি।
সমাবর্তনের প্রতীক্ষায় দিন গুণছেন তারা সবাই।
সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমাবর্তনের আবেদন জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো এক অজানা কারণে সাড়া দেয়নি। তাই বর্তমান উপাচার্য এবং ট্রেজারার আসার পর আয়োজনটি করা নিয়ে জোরালো দাবি তুলেছেন তারা। কারণ ‘সমাবর্তন’ই যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরের পর বছর না হয়, তাহলে কীভাবে হবে?
অর্থনীতির ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ‘সমাবর্তন আমাদের কাছে যেমন আনন্দের, তেমনি গৌরবের। শিক্ষা জীবন পূর্ণতা পায় । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে, দেখতে প্রায় ১ যুগের পথে। এখনো কোনো সমাবর্তন হয়নি, দুঃখজনক।’
মার্কেটিংয়ের সাবেক ছাত্র শোয়েব আহমেদ যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত। জানান, ‘এ আসলেই হতাশাজনক -একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর পার করল। ৬টি ব্যাচ পাস আউট হলো কিন্তু একবারও প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেনি। অতি দুঃখের, গত মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাও জানত না যে, আমাদের মূল সার্টিফিকেটের লে-আউট বা ডিজাইন কেমন হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রশাসনের এসব উদাসীনতায় সাধারণ ছাত্র, ছাত্রীরা প্রতিনিয়তই নানা জটিলতায় পড়ছে।’
তিনি আরো বলেন, 'কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মূল সনদ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমার একজন সহপাঠী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ পেয়েও যেতে পারেনি ৷’
সমাবর্তন নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, 'সমাবর্তনের কথা আমাদের ভিসি স্যার অনেকবার চ্যান্সেলর মহোদয়কে জানিয়েছেন। তার সিডিউলের জন্য আটকে আছে ৷ অতি দ্রুত আয়োজন করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ৷'
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘সমাবর্তন ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণতা লাভ করে না ৷ অপরিহার্য এই আয়োজন। ছাত্র, ছাত্রীদের ডিগ্রি অর্জন পূর্ণতা লাভ করে। আশা করি, দ্রুততম সময়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।’
উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে একাধিকবার ফোন কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও ফোন রিসিভ করেননি ও বার্তার উত্তর দেননি ৷
তবে তাকে ফোন করার বিষয়টি তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদকে জানিয়েছেন।
ফয়সাল মাহমুদ এই প্রতিবেদককে ফোন করেছেন ও সমাবর্তন নিয়ে বলেছেন, ‘গত জুলাইয়ে চ্যান্সেলর মহোদয়কে সমাবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। প্রস্তুতির অনেক বিষয় আছে। অনেক ফান্ডিং ও চ্যান্সেলরের প্রটোকল আছে।’
ওএফএস।
