বশেমুরবিপ্রবিতে আবারও বেড়েছে সাপের উপদ্রব
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আবারও বেড়েছে সাপের উপদ্রব। এর আগে গত বছরের শীতকালের প্রথমদিকে বেশ সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা, মাঠ, স্কুল, লেকপাড় ও হল সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলছে বিষধর সাপের। সর্বশেষ সোমবার (১১ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংলগ্ন রাস্তা ও স্বাধীনতা দিবস হলের সামনে গোখরা প্রজাতির সাপের দেখা মিলেছে। এতে করে চরম আতঙ্কে রয়েছেন আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় গোখরা প্রজাতির সাপের দেখা মিলে। এদিকে নিরাপদ চলাচল ও সাপের বিষ নিবারক ভ্যাকসিনের জন্য গত নভেম্বরে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আবেদনপত্রে ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় মুক্ত ও জেলা সদর হাসপাতালে এন্টিভেনম (Anti-Venom) ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনপত্রের প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের নির্দেশে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় কার্বলিক অ্যাসিড দেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন জায়গায় সাপের প্রজননক্ষেত্র থাকায় প্রতিনিয়ত সাপের দেখা মিলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞান ও ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক মো. শরিফুজ্জামান বলেন, 'এর আগেও একাধিকবার সাপের উপদ্রবের কথা জানা গেছে৷ আসলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে এদের চলাচল। বিশেষ করে এদের প্রজননক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হওয়ায় প্রায়শই এদের দেখা মিলছে।'
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে মালীদের সংখ্যা যথেষ্ট না থাকায় এবং তাদের অবহেলায় ঝোপঝাড় পরিষ্কার না রাখায় শিক্ষার্থীরা সাপের মুখোমুখি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, বিষধর যে সাপগুলোর দেখা মিলছে সেগুলোর বয়স ৪-৫ মাসের কম নয়। এর মানে ক্যাম্পাসে কোনো মা সাপ অনেকগুলো ডিম ফুটিয়েছে, যার কারণে উপদ্রব বেশিই দেখা দিচ্ছে। কোনো ধরনের বিপদ ঘটার আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, 'সাপের উপদ্রবের বিষয়টি জেনেছি। এর আগে আমরা হল ও ডরমিটরি সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায় কার্বলিক অ্যাসিড দিয়েছি। শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে সেজন্য আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিব।'
উল্লেখ্য, গোখরা প্রজাতির সাপের বিষ মূলত একটি শক্তিশালী সিনাপটিক নিউরোটক্সিন ও কার্ডিওটক্সিন সমৃদ্ধ বিষ। যা দংশনের ৪০-৫৫ মিনিটের মধ্যে মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে এই প্রজাতির ১০টির বেশি সাপ মারা হয়েছে।
টিটি/