ওবিই অধ্যাপক ড. সালিমুল হককে তার আইইউবি সংবর্ধনা দিলো
ব্রিটেনের রাণীর অত্যন্ত সম্মানজনক ‘অফিসার অব দি অর্ডার অব দি ব্রিটিশ অ্যাম্পায়ার’ বা ‘ওবিই’ পদকে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)’র ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দি ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি)’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. সালিমুল হক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বরেণ্য অধ্যাপক, আইসিসিসিএডি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ‘ওবিই’ হওয়ায় তার বিশ্ববিদ্যালয় সংবর্ধনা প্রদান করেছে।
অধ্যাপক ড. সালিমুল হক ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন এবারের ‘অফিসার অর্ডার অব দি ব্রিটিশ এম্পায়ার’ সম্মাননায় ভূষিত হয়ে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের হাত থেকে পদকটি গ্রহণ করেছেন।
১০ এপ্রিল রবিবার সকালে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আইইউবি’র স্থায়ী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও প্রখ্যাত কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. এম. শামসুল আলম।
স্বাগত বক্তব্যে আইইউবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান বলেছেন, ‘আমাদের আইইউবি শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক বিভিন্নতা ও পরিবেশ সচেতন ও কার্যকর করে প্রযুক্তিমনা হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে উন্নতির জন্য দক্ষতাগুলো অপরিহার্য। আমাদের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) এই মিশনের বিশাল অংশ বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এর বাদেও অধ্যাপক ড. সালিমুল হকের সহযোগিতা ও গবেষণা আমাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের শেখা ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।’
অধ্যাপক ড. এম. শামসুল আলম বলেছেন, ‘এই শতকে পুরো বিশ্বের মধ্যে একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ১শ বছরের ডেল্টা প্ল্যান তৈরি করেছে। তখন আমরা আইইউবির বরণ্যে অধ্যাপক ড. সালিমুল হকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ লাভ করেছি। তিনি বাংলাদেশের ডেল্টা মহাপরিকল্পনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে আমরা সবাই কৃতজ্ঞ।’
বিশেষ অতিথি সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ক্রিকেট জাগরণের নেপথ্য নায়ক, পরিবেশ বন ও জলবায়ুর পরিবর্তন বিষয়ক সংসদে স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘জলবায়ুর যেকোনো প্রশ্নেই নূন্যতম পরিবর্তন আনাটিও খুব কঠিন কাজ। বিশ্বের আবহাওয়ার বদলের সঙ্গে, সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলো যে ক্ষতি ও ধ্বংসের মুখোমুখি হয়ে চলেছে, তার দরকষাকষিতে অধ্যাপক ড. সালিমুল হক দৃঢ়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাতে আমাদের বাংলাদেশ উপকৃত হচ্ছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের হাই কমিশনার রর্বাট চ্যাটারটন ডকিসন তার ‘ওবিই’ প্রসঙ্গে বলেছেন, “অত্যন্ত সম্মানজক এই পুরস্কারগুলো ব্রিটেনের রাণী নিজে প্রদান করেন। ‘অর্ডার’ ও ‘অনার্স’ পুরস্কার ব্যবস্থার মাধ্যমে সারা বিশ্বের বিশেষ কৃতিদের অসাধারণ কাজগুলোর স্বীকৃতি সম্মাননা প্রদান করে আমার দেশ। অধ্যাপক ড. সালিমুল হককে ওবিই সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সম্মানিত হয়েছে।”
আরেক অতিথি সাবেক মূখ্যসচিব ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক এসডিজি সমন্বয়ক, এখন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)’র বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘অধ্যাপক ড. সালিমুল হক আগের মতোই এখনো সিভিএফকে সারাক্ষণ সহযোগিতা করছেন। তিনি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সিভিএফের সব প্রেসিডেন্সিকে তার কাজে সমর্থন যুগিয়ে চলেছেন। আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’
আইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এ. মতিন চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সহ আজকের বাংলাদেশের এবং বিশ্বের আজকের তরুণ-তরুণীদের অবশ্যই অধ্যাপক ড. সালিমুল হকের মতো কৃতি ব্যক্তিদের অনুসরণ করা উচিত। তারা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও উন্নত জীবনযাপন ছেড়ে দেশে ফিরে দেশের সমৃদ্ধিতে অর্থবহ অবদান রেখে চলেছেন।’
সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে অইইউবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন।
সংবর্ধনায় খুব খুশি হয়ে অধ্যাপক ড. অধ্যাপক সালিমুল হক বলেছেন, ‘আপনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। আমি বিশ্বাস করি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা এখন আমাদের বাংলাদেশের আছে। আমরা এখন আর জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার নই, সমস্যাগুলোর সমাধানের মানসিকতা এবং যোগ্যতাসম্পন্ন দেশ। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বে একটি মডেল হয়ে উঠেছে।’
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভাসিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা, প্রায় সব বিভাগের ছাত্র, ছাত্রী, গবেষক, অধ্যাপক, সমাজের আরো অনেক বরেণ্য ব্যক্তি, জলবায়ু পরিবর্তনকর্মী, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. সালিমুল হকের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন।
অধ্যাপক ড. সালিমুল হকের বর্ণাঢ্য ও কর্মময় জীবন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে তার নেতৃত্বে আইইউবির কাজের ওপর আলাদা দুটি বিশেষ ভিডিওচিত্র আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন সবাই।
ওএস।